Sunday, April 23, 2023
'রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সুন্নাত ও আধুনিক বিজ্ঞান' বইয়ের কিছু কথা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
Wednesday, April 19, 2023
অনুকাব্য-১০ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
(১)
কতোদিন ভেবেছি তোমায়,
পাইনি তব তোমার দেখা।
হঠাৎ করেই পেয়ে যাবো,
হয়তো তাই মোর বসে থাকা।
তুমি আসবে, ভালোবাসবে,
এই ভেবে মোর পথ চাওয়া।
(২)
আজ পেয়েছি তোমায় কাছে,
বলেছি মনে মোর যে কথা আছে।
হয়তো পারনি তুমি তা বুঝিতে,
নয়তো পারিনি তোমায় বোঝাতে।
তুমি বুঝে নিবে, নাকি হবে বোঝাতে,
যে কথা আছে জমা মোর হৃদমাঝারে।
(৩)
জানি পাবো তোমায় আরো কাছে,
নয়তো হারাবো আমি চিরতরে।
তবু ভেবোনা যাবো তোমায় ভুলে,
তুমি আছো যে আমার মনের গহীনে।
-- মোঃ হেলাল উদ্দিন
Tuesday, April 18, 2023
অপেক্ষা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
আমি তাকিয়ে আছি তোমার আসার পথ চেয়ে
পরনে নীল শাড়ি আর কপালে নীল টিপ দিয়ে
প্রকৃতির নীল কেও অগ্রাহ্য করিতেছ
তোমার নীল শাড়ি আর নীল টিপ
আমি তা দেখার অপেক্ষায় চেয়ে আছি।।
আলাউদ্দিন আল আজাদ এর উপন্যাস 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
আলাউদ্দিন আল আজাদ এর প্রথম উপন্যাস 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র। উপন্যাসটি ১৯৬০ সালে 'পদক্ষেপ' নামক একটা অনিয়মিত পত্রিকার ঈদ সংখ্যায় প্রথম ছাপা হয়। বই আকারে প্রথম প্রকাশ করে 'নওরোজ কিতাবিস্তান' প্রকাশনী। তৎকালীন সময়ে রচিত ও প্রকাশিত উপন্যাসটি ছিলো আলাউদ্দিন আল আজাদের একটি অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপ হলোঃ
আর্ট স্কুলের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র জাহেদের সঙ্গে রঙের দোকানে হঠাৎ করেই পরিচয় ঘটে জামিলের। জামিলের অনুরোধে তাকে বিজ্ঞাপন আঁকার কাজে সাহায্য করতে গিয়ে জামিলের বোন ছবির সঙ্গে জাহেদের পরিচয় হয়। ছবির সাদামাটা মায়াময়ী ভাব অতি দ্রুতই জাহেদকে তার প্রতি আকৃষ্ট করে ফেলে। ছবির আকর্ষণেই জাহেদ বারবার জামিলের বাড়িতে যেতে থাকে। একপর্যায়ে জাহেদ ছবির প্রতি ভালবাসা অনুভব করতে শুরু করে এবং শীঘ্রই দুজন দুজনকে গভীরভাবে ভালবেসে কাছে আসে। মূলত, প্রেমের উত্থান এবং প্রেমকে লালন করার তীব্র সৌন্দর্যের বর্ণনার মাধ্যমে উপন্যাসটির সূচনা ঘটে।
জামিল একসময় ছবির প্রতি জাহেদের আকর্ষণ বুঝে ফেলে। জামিল মনে করতো, বিয়ে সত্যিকারের শিল্পী হওয়ার পথে অন্তরায়। তাই জাহেদ জামিলের কাছে ছবিকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে বিরুপভাবে প্রতিক্রিয়া করে। জামিল জাহেদকে আঘাত করে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। কলকাতায় আর্ট স্কুলে পড়াকালে সহপাঠিনী মীরা দাশগুপ্তার সাথে জামিলের প্রেম হয় এবং তাদের বিয়েও হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিরাগ জন্মালে তারা পৃথক হয়ে বাস করতে শুরু করে।
জামিল অসুস্থ হয়ে পড়লে জাহেদ মীরাকে ডেকে আনে এবং মীরা অসুস্থ জামিলের আবারও সেবা করতে শুরু করে। তাদের পুনরায় পারিবারিক মিলন ঘটে। এরপর মীরার মাধ্যমেই জাহেদ ও ছবির বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়।
অবশেষে শরতের একদিনে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম রাতে জাহেদ আবিষ্কার করে- ছবির দেহে স্পষ্ট মাতৃত্বের চিহ্ন। মুহূর্তেই তার পুরো জগত দুলে ওঠে। কোথায় যেন সুর কেটে যায়। দীর্ঘ কয়েকদিন টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গিয়ে সে ছবির কাছে প্রশ্ন করে, “কেন ধোঁকা দিলে?” রাতভর জেগে ছবির কান্নাভরা কণ্ঠ থেকে সে জানতে পারে, ছবির দাদা জামিলের কাছে আসা এক ব্যবসায়ী পশুর হাতে বাধ্য হয়ে সকলের অজান্তে তার নিরীহ আত্মসমর্পণের গল্প। ছবির পেটে আসা বাচ্চাটিকে পরে গর্ভপাত করে নষ্ট করে ফেলা হয়। শিশুর কান্না শুনলেই ছবির বুকে যে হাহাকার জেগে ওঠে, তার করুণ গল্প সে শোনায়। ছবি গভীর ভালবাসায় বলে, জাহেদই তার জীবনের প্রথম প্রেম এবং তার জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। জাহেদ অনুভব, দুর্ঘটনার কবলে ছবি ছিল নিতান্তই অসহায়, তাই সেটি উপেক্ষা করাই শ্রেয়।
সংকীর্ণতার বদলে মহত্ত্ব দেখিয়ে সব ঘটনাকে জাহেদ সহজভাবে গ্রহণ করে এবং ভালবেসে আবার ছবিকে আগলে ধরে। তার কাছে মনে হয়, ছবির আর তার ভালবাসাই তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। তাদের ভালবাসায় জন্ম নেয় তাদের ভালবাসার প্রথম পুষ্প-সন্তান টুলটুল।
জীবনে দুঃখ-কষ্ট বা বেদনার চেয়ে হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসরিত প্রেমও যে একজন শিল্পীর শিল্প সৃষ্টির প্রধান অনুপ্রেরণা হতে পারে, তা জাহেদ বিশেষভাবে অনুভব করে। মায়ের কোলে গভীর মমতায় জাপটে ধরে বসে থাকা শিশুর যে চিত্র, ঐ চিত্রের সৌন্দর্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই বলে জাহেদের মনে হয়। ছবি ও টুলটুলের একটি ছবি এঁকে সে ছবিটির নাম দেয় 'মাদার আর্থ', অর্থাৎ ‘বসুন্ধরা’। পাকিস্তানের 'জাতীয় চিত্রকলা প্রদর্শনী'তে ছবিটি প্রথম পুরস্কার পায়। স্নিগ্ধতায় ভরা সেই ছবিটির সৃষ্টির কাহিনী বলতে গিয়েই এ উপন্যাসের গল্প জাহেদ বলতে শুরু করে। এছাড়া বন্ধু মুজতবার সাথে জাহেদের পতিতালয় এবং পাহাড়ী এলাকায় যাওয়ার কিছু আনুষঙ্গিক ঘটনাও রয়েছে। পতিতালয়ের রাধারানী অথবা পাহাড়ি এলাকায় মগকন্যা তিনার সাথে মুজতবার ব্যর্থ প্রেমও এ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। জাহেদের পাকিস্তান থেকে পুরস্কার পেয়ে প্লেনে করে পুনরায় ঢাকায় ফিরে ছবি ও টুলটুলকে কাছে টেনে নেওয়ার কথা বলে উপন্যাসটির সমাপ্তি ঘটেছে।
উপন্যাসটিকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এর উদ্যোগে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় চলচ্চিত্রে রুপ দেয়া হয় 'বসুন্ধরা' নামে, যাতে মূল চরিত্রে ছিলেন ববিতা ও ইলিয়াস কাঞ্চন। ছবিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুস্কার পেয়েছিল। এছাড়াও উপন্যাসটি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
বইঃ তেইশ নম্বর তৈলচিত্র
লেখকঃ আলাউদ্দিন আল আজাদ
প্রকাশকঃ বইপত্র
Saturday, April 15, 2023
ইচ্ছা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
নিজেকে পাল্টে ফেলি
অন্য রুপে,
হ্যাঁ, একেবারে অন্য রুপে।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
নিজেকে লুকিয়ে ফেলি
নিজের থেকে,
একেবারে অন্য রুপে, অন্য খানে।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
হারিয়ে যাই আমি
হারিয়ে যাই সবার থেকে
দূরে, বহু দূরে।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে শুরু করি
নতুন করে জীবনটাকে
ভিন্ন রুপে, ভিন্ন পথে।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে হেঁটে চলি
নির্জন এক রাস্তা ধরে
পথের মাঝে, পথে পথে।
মাঝে মাঝেই ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে নতুন করে
নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে
জীবনটাকে দেই পাড়ি।
--------
ইচ্ছা
বরিশাল
০৬/০৬/২০১৭
আত্মবিশ্বাসই শক্তি, আত্মবিশ্বাসেই মুক্তি -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
"বিশ্বাস ও দৃঢ় ইচ্ছার সম্মুখে অসম্ভব সম্ভব হয়ে পড়ে। তোমার সাধনায় যদি তুমি জয়ী হতে চাও, তবে সমস্ত মন তোমার কর্মে ঢেলে দাও- প্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করো, তুমি কৃতকার্য হবে।" কথাগুলো আমার নয়, এ কথাগুলো বলেছিলেন ডা. লুৎফর রহমান তার 'উন্নত জীবন' প্রবন্ধ গ্রন্থে। তার এই লেখাটা পড়তে গিয়েই আপন মনে কিছু কথার সৃষ্টি হলো যা বলতেই এই ক্ষুদ্র চেষ্টা মাত্র।
"বিশ্বাস" খুব ছোট একটা শব্দ, কিন্তু এর ব্যাপ্তি অনেক বেশি এবং এর ধরনও ভিন্ন ভিন্ন আছে। সাধারনের প্রতি বিশ্বাস এক কথা আর নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাস ভিন্ন কথা। সর্বসাধারনের প্রতি বিশ্বাস এক একটা সম্পর্কের সৃষ্টি করে এবং এ সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে আর নিজের প্রতি বিশ্বাস হলো নিজের টিকে থাকার, সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি। নিজের প্রতি নিজের এই বিশ্বাসকেই বলে আত্মবিশ্বাস। এই আত্মবিশ্বাসের কারনেই টিকে আছে মানব সম্প্রদায়। প্রতিটা মানুষের মনেই এই বিশ্বাসের অস্তিত্ব বিদ্যমান আছে বলেই আমি মনে করি তবে কার আত্মবিশ্বাস কতোটুকু এটা নিয়ে একটু হলেও সংশয় থাকতে পারে। কেননা সবার আত্মবিশ্বাস যদি সমান হতো তবে পৃথিবীতে এতো সমস্যা থাকতো না। সবাই নিজ নিজ গুনে সকল সমস্যার সমাধান করে ফেলত অতি সহজেই। কিন্তু তা যখন হচ্ছে না তখন বলতেই হয় সবার আত্মবিশ্বাস সমান নয়।
পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যে সকল মহামানব এসেছেন এবং তার কর্মের দ্বারা আমাদের মাঝে চিরস্থায়ী হয়ে রয়েছেন তাদের জীবনী একটু জানার চেষ্টা করলেই দেখতে পাবো তারা কত শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে তাদের সফলতা ছিনিয়ে এনেছেন।আত্মবিশ্বাস ছাড়া সফলতা লাভ করা যায় না, আত্মবিশ্বাসহীন মানুষ কখনোই সফলতার দেখা পায় না। আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছা শক্তির দ্বারাই জগতে অনেক বড় কিছু করা সম্ভব। এই আত্মবিশ্বাসের সাথে সাথে মনে অনেক বড় স্বপ্ন ও চাওয়া থাকা জরুরী।
সেই দাদা-নাতির গল্পের নাতির ইচ্ছা বা চাওয়া 'বড় হয়ে চৌকিদার' হওয়ার মতো হয় তবে কিন্তু হবে না। কেননা গল্পে দাদা বড় হয়ে দারোগা হতে চেয়েছিল কিন্তু তা না হতে পেরে শেষে চৌকিদার হয়েছে আর নাতি চাচ্ছেই চৌকিদার হতে, সে আর কি হতে পারবে তা বুঝতেই পারছেন। তাই জীবনে ভালো কিছু করতে হলে প্রতিটি মানুষকে বিশ্বাসী, আত্মবিশ্বাসী এবং বড় স্বপ্ন ও ইচ্ছা শক্তির অধিকারি হতে হবে, তবেই জীবনে বড় ধরনের সফলতা আসবে। কোন এক ছাত্র পরীক্ষার আগে জ্বরে পরলো কিন্তু মনোবল না হারিয়ে পড়া শুরু করল এবং কিছুক্ষণ পরেই দেখলো তার আর জ্বর নেই। এই যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রবল ইচ্ছা শক্তি দিয়ে কাজ শুরু করার কারনেই সে জ্বর থেকে মুক্তি পেয়েছিল, তেমনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যদি আমরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে সাহসের সাথে কাজ শুরু করি তবে সফলতার দেখা অবশ্যই পাবো। কেননা আত্মবিশ্বাসই শক্তি, আত্মবিশ্বাসেই মুক্তি।।