Showing posts with label সামাজিক গবেষণা পদ্ধতির সহজপাঠ. Show all posts
Showing posts with label সামাজিক গবেষণা পদ্ধতির সহজপাঠ. Show all posts

Friday, December 13, 2024

থিসিস লেখার নিয়ম ও সম্পাদনা পদ্ধতি -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

থিসিস লেখার নিয়ম ও সম্পাদনা পদ্ধতি

যে কোন বিষয়ে গবেষণা পরিচালনার শেষ ধাপ হলো থিসিস লেখা এবং তা সম্পাদনা করে জমা দেয়া। থিসিস লেখা ও সম্পাদনার কাজটি যদি সুন্দর ও সফলভাবে না করা যায় তাহলে পুরো গবেষণার কষ্টটাই বিফলে চলে যাবে, কেননা গবেষণার ফলাফল এই থিসিসের মাধ্যমেই সকলের সামনে তুলে ধরা হয়। তাই থিসিস লেখার সঠিক ও সুন্দর নিয়ম সম্পর্কে ধারণা নেয়া প্রত্যেক গবেষকের জন্য দরকারি। আজকের এই লেখায় থিসিস লেখার নিয়ম ও থিসিস সম্পাদনা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা তলে ধরা হলো।

 

১। থিসিস কি

থিসিস বা অভিসন্দর্ভ হল একটি দীর্ঘ পরীক্ষামূলক, তাত্ত্বিক প্রতিবেদন, যার একটি সমস্যা, পদ্ধতি, ফলাফল, এবং আলোচনার কাঠামো রয়েছে। 

অক্সফোর্ড ডিকশনারী অনুসারে, থিসিস হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির জন্য লিখিত দীর্ঘ প্রবন্ধ। একটি থিসিস লেখার মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য একই থাকে। তবে থিসিস লেখার পরিধি, দৈর্ঘ্য ও প্রকৃতি ভিন্নতা থাকতে পারে।

থিসিস (Thesis) হল দীর্ঘ একাডেমিক লেখা যার সাথে ব্যক্তিগত গবেষণা জড়িত। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ার ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা পাওয়ার জন্য লেখা হয়ে থাকে। 

থিসিস লেখা সম্পন্ন হলে, তা কমিটি, সুপারভাইজার, অন্যান্য অধ্যাপকের সামনে প্রেজেন্টেশন আকারে উপস্থাপন করা হয়। সবশেষে, ভাইভা নেওয়ার মাধ্যমে থিসিস এর ফলাফল দেওয়া হয়।

 

২। থিসিস লেখার নিয়ম

একটি থিসিস নিম্মোক্ত উপাদানগুলো নিয়ে গঠিত। যেমন-

           1.      শিরোনাম পাতা (Title page)

           2.     থিসিসের প্রধান অংশ

           3.    থিসেসের শেষ অংশ (End)

 

৩। শিরোনাম পাতা (Title page)

থিসিস পেপারের শুরুতে টাইটেল পেজ বা শিরোনাম পাতা থাকে যেখানে থিসিসের আনুসাঙ্গিক বিষয়বস্তু লেখা হয়। এটিতে নিম্মলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে। যেমন-

  • থিসিসের শিরোনাম
  • লেখকের নাম
  • থিসিস সুপারভাইজার নাম
  • স্থান বা প্রতিষ্ঠান
  • ডিগ্রীর নাম
  • তারিখ

শিরোনাম পৃষ্ঠায় একটি স্বাক্ষরিত ঘোষণা থাকা উচিত যে, থিসিসে উপস্থাপিত কাজ প্রার্থীর একান্ত নিজস্ব। যেমন-

‘‘আমি, [সম্পূর্ণ নাম] নিশ্চিত করছি যে এই থিসিসে উপস্থাপিত কাজটি আমার নিজস্ব। এটি করতে অন্যান্য উৎস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে, এবং আমি নিশ্চিত করছি যে এটি থিসিসে নির্দেশিত হয়েছে।’’

৩.১। সারাংশ (Abstract)

এখাবে থিসিসের সারাংশ যথাসম্ভব সংক্ষেপে করতে হয়। একটি সারাংশে থিসিসের বিষয় বা সমস্যা, পদ্ধতি, ফলাফল এবং উপসংহার এই বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সারাংশ সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ শব্দের মধ্যে হলে ভালো হয়।

৩.২ । সুচিপত্র (Table of contents)

থিসিসের মূল বিষয় শিরোনাম এবং উপশিরোনাম পৃষ্ঠা নম্বর সহ তালিকাভুক্ত করতে। সূচিপত্রে স্বীকৃতি, পরিশিষ্ট, এবং গ্রন্থপঞ্জি ইত্যাদিও তালিকাভুক্ত করতে হয়। এছাড়া থিসিসের পরিসংখ্যান তালিকা, চিত্র সংখ্যা, চিত্র শিরোনাম এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ইত্যাদিও অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।

 

৪। থিসিসের প্রধান অংশ

৪.১। ভূমিকা (Introduction)

থিসিসের ভূমিকায় বর্ণনা যে বিষয়গুলো নিয়ে আসতে হয়- (১) গবেষণার/ তদন্তের উদ্দেশ্য, (২) যে সমস্যাটি গবেষণা/ তদন্ত করা হচ্ছে, (৩) সমস্যার পটভূমি (প্রসঙ্গ এবং গুরুত্ব), (৪) থিসিস পদ্ধতি, এবং (৫) অধ্যয়নের সাফল্যের মানদণ্ড ইত্যাদি।

৪.২। সমস্যা অনুসন্ধান (Problem Search)

সমস্যা অনেক ভাবেই খুঁজে পাওয়া যায়। তবে আপনি যে বিষয়  নিয়ে কাজ করতে চান ঐ বিষয়ে প্রচুর আর্টিকেল (কনফারেন্স/জার্নাল) ইত্যাদি পড়ুন, এটা সহজে সমস্যা খুঁজে পাওয়ার প্রথাগত নিয়ম। প্রথমে অনেক বড় বড় সমস্যা আসতে পারে সেখান থেকে সবচেয়ে narrow পার্ট নিয়ে কাজটি এগিয়ে নেন। আগে পছন্দের টপিকের জন্য কারেন্ট পেপারগুলো পড়ুন এবং সেগুলো থেকে শর্ট রিভিউ করে রাখুন। এটি সবচেয়ে কম সময়ে ভালো একটি সমস্যা খুঁজে পাওয়ার সহজ উপায়।

যেমন ধরুন, বাংলাদেশের শিক্ষার সমস্যা নিয়ে একটি স্টাডি করবেন বলে স্থির করছেন। তখন শিক্ষার কোন স্তরের সমস্যা নিয়ে থিসিস করবেন তা চিন্তা করুন। এক্ষেত্রে ভালো হবে একটি মাত্র টাইপ নিয়ে কাজ করা। যেমন- প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যা, অথবা মাধ্যমিক শিক্ষার, অথবা কারিগরি শিক্ষার সমস্যা, এগুলোর যেকোন একটি বিষয় নিয়ে থিসিস করতে পারেন।

4.3। গ্রন্থ পর্যালোচনা (Literature Review)

 গবেষণা প্রধানত তিন ধরণের হয়ে থাকে। যথা- মৌলিক গবেষণা, রিভিউ বা পর্যালোচনা এবং সার্ভে/জরিপ গবেষণা। মৌলিক গবেষণা লেখা হয় মূল গবেষণার উপর ভিত্তি করে। আর মূল গবেষণার মধ্যে পরে, ল্যাবরেটরী ভিত্তিক গবেষণা, ডাটা সাইন্স ফিল্ড এবং সিমুলেশন রিসার্চ। মোট কথা হচ্ছে, যে কাজ করে আমি কোন ডাটা পাবো, তাই হচ্ছে মূল গবেষণা। এই কারণে এই সব ডাটাকে বলা হয় প্রাইমারি ডাটা। কিন্তু এইসব ডাটা যখন কোন জার্নালে বা বই আকারে প্রকাশিত হয়, তখন অন্য কেউ যদি এই একই ডাটা দিয়ে তার ডাটার সাথে কাজে করে, তখন তা হয়ে যায় সেকেন্ডারি ডাটা। এই সেকেন্ডারি ডাটা দিয়েই মূলত রিভিউ পেপারের কাজ করতে হয়। যখন আপনি সমস্যা বের বের করতে পারবেন তখন আপনাকে দেখাতে হবে আপনার গবেষণাটি কেন দরকার। অর্থাৎ আপনাকে বোঝাতে হবে আপনার রিসার্চের মোটিভেশন কী? সেজন্য এই সমস্যার উপর ইতোপূর্বে কীরকম কাজ হয়েছে এবং কাজগুলোকে আপনার রিভিউ করতে হবে। লিটারেচার রিভিউ সময় নিয়ে করতে হয় এবং রেফেরেন্স পেপারের জার্নালের মান, এবং তাঁরা কতটা রিলায়েবল এটি মাথায় রাখতে হয়।

৪.৪। পদ্ধতি (Methodology)

একজন গবেষক নানা ভাবে তার গবেষণা করতে পারেন। যে কোন গবেষণার জন্য অনেক ধরণের পরীক্ষিত কৌশল থাকে। কৌশলগুলো লেখার সময় উদাহরণ হিসেবে নিজের গবেষণার কোন উদাহরণ দিয়ে তা বিস্তারিত কোথায়, কোন সেকশনে, কোন চ্যাপ্টারে আছে সেটা উল্লেখ করে একটি সংযোগ তৈরি করে দিতে হয়। এই অংশে মূলত একটি পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ করা হয়।

৪.৫। ফলাফল (Results)

গবেষণার ফলাফলগুলো টেবিল এবং গ্রাফসহকারে উপস্থাপন করতে হয়। ফলাফলের নিদর্শন এবং গুণমান চিহ্নিত করতে হয় এবং এর নির্ভুলতা অনুমান করতে।

৪.৬। আলোচনা (Discussion)

ফলাফলের অর্থ এবং এটির তাৎপর্য কী তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হয়। তাত্ত্বিক প্রত্যাশার সাথে ফলাফলের তুলনা এবং অপ্রত্যাশিত কিছুর জন্য জবাবদিহি করতে।

৪.৭। উপসংহার (Conclusions)

উপসংহারে মূল সমস্যা বিবৃতি সম্পর্কিত ফলাফল পর্যালোচনা করতে। ভূমিকায় যে সাফল্যের মানদণ্ড দেয়া হয় তার আলোকে অধ্যয়নের সাফল্যের মূল্যায়ন করতে।

৪.৮। সুপারিশ (Recommendations)

থিসিসের এই অংশে ভবিষ্যতের কাজের জন্য নির্দেশনা সুপারিশ করতে হয়।

 

৫। থিসেসের শেষ অংশ (End)

৫.১। স্বীকৃতি (Acknowledgments)

এখানে আপনার উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক, তহবিল সংস্থা, সহকর্মী, প্রযুক্তিবিদ এবং আরও অনেকের সহায়তার স্বীকার করুন।

৫.২। পরিশিষ্ট (Appendixes)

পরিশিষ্টে বিস্তারিত গণনা, পদ্ধতি, ছক, সারণী, তালিকা ইত্যাদি স্থান পায়। পাঠক এটি ব্যবহার করে মূল বিষয়ের গভীরে যেতে সক্ষম হবে।

৫.৩। গ্রন্থপঞ্জি (Bibliography)

আপনার অধ্যয়নে উল্লেখ করা যেকোনো সংগ্রহীত তথ্য বা কাজকে বর্ণানুক্রমিকভাবে তালিকাভুক্ত করুন। এটি করতে গ্রন্থপঞ্জী এবং ফুটনোট এর ফর্ম্যাটগুলো অনুসরণ করুন।

 

৬। থিসিস সম্পাদনা পদ্ধতি

৬.১। ফন্ট (font)

থিসিস টাইপ করার সময় এটির ইংরেজি ফন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে হয় টাইমস নিউ রোমান (Times New Roman)। তবে বাংলা টাইপ করতে অবশ্য ফন্ট হিসেবে সুটুনি এমজে (SutonnyMJ) ব্যবহার করতে হয়। ইংরেজির জন্য ১২ এবং বাংলা জন্য ১৪ ফন্টের আকার বা সাইজকে স্টান্ডার্ড ফন্ট সাইজ হিসেবে ধরা হয়।

৬.২। কাগজ (paper)

থিসিসের কাগজ অবশ্যই A4 (210 x 297 মিমি) সাইজের ব্যবহার করতে হবে। সাধারণ ভালো মানের এবং পর্যাপ্ত অস্বচ্ছতার সাদা কাগজ ব্যবহার করতে হবে।

৬.৩। মার্জিন (Margin)

থিসিসের বাঁধাই প্রান্তে মার্জিন ৪০ মিমি (১.৫ ইঞ্চি) এবং অন্য তিন অংশে মার্জিন ২০ মিমি (.৭৫ ​​ইঞ্চি) এর কম হওয়া উচিত নয়।

৬.৪। পৃষ্ঠা সংখ্যা (Page no.)

সমস্ত পৃষ্ঠাগুলো একটি অবিচ্ছিন্ন ক্রমানুসারে সংখ্যা করা আবশ্যক অর্থাৎ প্রথম খণ্ডের শিরোনাম পৃষ্ঠা থেকে থিসিসের শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ধারাবাহিক সংখ্যা দিতে হবে। এই ক্রমটিতে মানচিত্র, ডায়াগ্রাম, ফাঁকা পৃষ্ঠা ইত্যাদি সহ ভলিউমের মধ্যে আবদ্ধ সমস্ত কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

৬.৫। থিসিস বাঁধানো (Thesis binding)

থিসিস প্রিন্ট আউট করার পর একটি সুন্দর মাঝারি নীল কাপড় কাভার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে। কাপড়টিতে যেন জল-প্রতিরোধী উপাদান থাকে এবং কাভার যথেস্ট শক্ত হতে হবে। কাভার পেজের উপরে না লিখে বরং থিসিসের বাম পাশে মেরুদন্ডে 16 বা 18 পয়েন্ট ফন্টে ডিগ্রী, বছর এর নাম সোনার অক্ষরে লিখতে হয়।

 

একটি গবেষণাকর্ম পরিচালনা শেষে থিসিস লেখা এবং তা উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে গবেষণার পরিসমাপ্তি ঘটে। বলা হয়ে থাকে, ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’ তাই গবেষণার শেষ কাজ হিসাবে থিসিস লেখা এবং তা সম্পাদনার ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া খুবই জরুরি তাহলেই একটি গবেষণাকর্মের সুন্দর ও সফল সমাপ্তি হবে। 

 

থিসিস লেখার নিয়ম ও সম্পাদনা পদ্ধতি 

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন

Friday, November 8, 2024

সামাজিক গবেষণায় আইসিটি’র প্রয়োগ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

সামাজিক গবেষণায় আইসিটি’র প্রয়োগ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সামাজিক গবেষণায় অনেক প্রভাব ফেলে। তিনটি শ্রেনিতে ভাগ করে গবেষণায় আইসিটি’র প্রয়োগকে দেখা যায়। যেমন-

১. প্রাক-তথ্য বিশ্লেষণে আইসিটি

২. তথ্য বিশ্লেষণে আইসিটি

৩. উত্তর-তথ্য (Post-data) বিশ্লেষণে আইসিটি

১। প্রাক-তথ্য বিশ্লেষণে আইসিটি’র প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে-

১. সাহিত্য অনুসন্ধানঃ লাইব্রেরিতে হাজার হাজার বইয়ের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় সাহিত্য অনুসন্ধান করা ক্লান্তিকর ও সীমিত ফলাফলের চেষ্টা। সেখানে ইন্টারনেটে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে বই, নিবন্ধ, জার্নাল সহ প্রয়োজনীয় সকল কিছু সহজেই পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যে সকল এ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে সাহিত্য অনুসন্ধান করা যায় তা হলো- Shodh Ganga, Google Scholar, Microsoft Academia Search, Mendeley, SSRN. এছাড়াও রয়েছে- AMS, Annual Reviews, ASME, Digital Collection, Cambridge Core, CAS, Cochrane Library, e-Book Academia Collection, EBSCO, Databases, IEEE Xplore, JSTOR, Springer Link ইত্যাদি।

২. বিষয়বস্তু অনুসন্ধানঃ সাহিত্য অনুসন্ধানে গবেষক সফ্ট কপি ব্যবহার করে আরো সহজে গবেষণা করতে পারে। অনলাইনে প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষক সহজে অধ্যায় অনুসন্ধান করে এবং কম সময়ে উর্পযুক্ত পর্যালোচনা করতে পারে। বিশেষ করে গুণগত গবেষণায় এটা অত্যন্ত কার্যকরী একটা পদ্ধতি।

৩. সাহিত্য ট্রাকিংঃ অতীতে গবেষককৃত তৈরি করা সমস্ত সাহিত্য বা নির্দশনগুলোকে বাছাই করতে, শ্রেণিবদ্ধ করতে এবং সংরক্ষণ করতে তারা যে ফোল্ডারগুলো ব্যবহার করেছে বর্তমানে গবেষকরা মেন্ডেরির মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই তা করতে পারেন। তবে কম্পিউটার ছাড়া এই কাজ করা কঠিন।

৪. তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে জরিপের মাধ্যমে স্বল্প সময় ও খরচে খুব সহজে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত দুইটি এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের নাম হলো- Google Forms এবং Survey Mankey.

২। তথ্য বিশ্লেষণে আইসিটি’র প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে-

১. পরিমাণগত তথ্য বিশ্লেষণঃ অনুসন্ধানমূলক ঘটনা বিশ্লেষণে, একাধিক প্রত্যাবৃত্তি (Multiple regression), টি-টেস্ট (T-Test), অনৈক্যবিশ্লেষণ (Analysis of Variance), ইত্যাদির ক্ষেত্রে গবেষক পরিমাণগত তথ্য বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। বর্তমানে আরো কতিপয় তথ্য বিশ্লেষণ কৌশল ব্যবহার করা হয়। যেমন- Path Analysis, Covariance Base Structural Equation Modeling SEM, Hierarchical Regression Analysis, Hierarchical Linear Modeling ইত্যাদি। এছাড়াও পরিমাণাত্মক তথ্য বিশ্লেষণে সহজে আরো যে এ্যাপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে রয়েছে-

                                I.            Statistical Package for Social Science

                             II.            R (R foundation for statistical computing)

                           III.            MATLAB (The math work)

                          IV.            Microsoft Excel

                             V.            SAS (Statistical Analysis Software)

                          VI.            Graph Pad Prism

                        VII.            Minitab ইত্যাদি।

২. গুণাত্মক তথ্য বিশ্লেষণঃ গুণাত্মক তথ্য বিশ্লেষণের জন্য যে সকল পরিসংখ্যানগত সফ্টওয়্যার সমূহ ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে রয়েছে-

                                I.            NVivo

                             II.            ATLAS.ti

                           III.            MAXQDA

                        IV.            SPSS Text Analysis

                           V.            Transan ইত্যাদি।

৩। উত্তর-তথ্য (Post-data) বিশ্লেষণে আইসিটি’র প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে-

১. তথ্যসূত্র ও গ্রন্থপঞ্জি সংকলন। এক্ষেত্রে যে সকল সফ্টওয়্যার ব্যবহৃত হয় তা হলো- End Note, Zotero এবং Mendeley ইত্যাদি

২. প্রবন্ধ এবং থিসিস/ গবেষণামূলক আলোচনার যে অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে তা হলো- Academia.edu Research Gate ইত্যাদি।

৩. চৌর্যবৃত্তি সনাক্তকরণে আইসিটি’র বড় অবদান রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে চৌর্যবৃত্তি সনাক্তকরণ সহজ হয়েছে। এই সফ্টওয়্যারের মধ্যে রয়েছে- Grammarly, Article Checker, Turnitin, Dupli Checker ইত্যাদি।

৪. জার্নাল পান্ডুলিপি জমা দেয়ার ক্ষেত্রে এখন ওয়েব ভিত্তিক পান্ডুলিপি ব্যবস্থাপনা এবং পিয়ার রিভিউ সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা সময় বাঁচায় এবং গুনগত মানকে উন্নত করে। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত সফ্টওয়্যারগুলোর মধ্যে রয়েছে- Elsevier, Wiley, Saga Publication ইত্যাদি।

গবেষণার জন্য উল্লেখিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এ্যাপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার ছাড়াও আরো বহু সফ্টওয়্যার রয়েছে যা একটি মান সম্মত গবেষণাপত্র তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। সুতরাং বলা যেতে পারে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার গবেষণাকে আরো সহজ এবং মানসম্মত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

সামাজিক গবেষণায় আইসিটি’র প্রয়োগ 

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন