Sunday, July 24, 2022

ভালোবাসা কাকে বলে -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

কারো হৃদয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়ি পড়ি করে

হয়নি বাঁধা পড়া ভালোবেসে তারে

কারো মনের গহীনে ধরা দিব দিব বলে

হয়নি ধরা দেয়া আপন করে তারে

কিন্তু এ কি হলো আজ আমার

বাঁধা কি পরিলাম, ধরা কি দিলাম

ভালোবেসে কি কেউ মোরে

আপন করে নিয়ে চিরতরে

বেঁধে নিয়েছে, ধরে ফেলেছে

তাহার মনের মন্দিরে, হৃদয় গহীনে

তাইতো ভাবি আজ আমি মনে মনে

সখি ভালোবাসা কি তাহারে বলে।।

© Md. Helal Uddin ®

11/07/2016

Monday, July 18, 2022

অব্যক্ত ভালোবাসা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

মুখের অনুচ্চারিত শব্দগুলো

ডুকরে কাঁদে বুকের ভিতর।

ডানা ভাঙা পাখির মতো ঝপটে মরে

বুকের ভিতরে জমা প্রতিটা বাক্য।

যে পাখি নীড় হারায় পথে বাঁকে

কেমন করে সে একা চলে গগণে।

তাইতো সাথী খুঁজে দূর আকাশে

পথিকের পথ পানে থাকে সে চেয়ে।

যদি কেউ পথ দেখায় জীবন পথে

সাথী করে নিয়ে যায় যদি সাথে।

বুকের মাঝে জমানো বাক্যগুলো

বলবে সে হৃদয় খুলে শব্দে শব্দে।

যা এতো দিন অনুচ্চারিত ছিলো

উচ্চারিত হবে তা উচ্ছাসিত কন্ঠে

ধ্বনিত হবে তা আকাশে বাতাসে।

অব্যক্ত ভালোবাসা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

স্বপ্নছায়া -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 কে তুমি বন হরিণী

কে তুমি মন হরণী

তোমায় মনে হয় চিনি

তুমি কি স্বপ্নছায়া

তুমি কি কেবলই মায়া

কেন হয়না তোমায় দেখা

তুমি কি দূরে রবে

তুমি কি নিরবে কাঁদাবে

ভালোবাসা আমায় নাহি দিবে।।

স্বপ্নছায়া -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

Sunday, July 17, 2022

ভালোবাসার গভীরতা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

আচ্ছা আমি মারা গেলে,
তোমার সাথে ঝগড়া করবে কে?
মাঝে মাঝে ঝগড়া করাও তো দরকার,
তা না হলে ভালোবাসা কি গভীর হয়?
ভালো না হয় তোমায় একটি কমই বাসি,
তাই বলে কি তোমায় ভুলে থাকতে পারি?
তুমি কি আমায় জানোনা, আমাকে চিননা
আমার ভালোবাসা কেমন বুঝনা?

আজ তোমার কাছে শুধু প্রশ্নই করবো,
উত্তর তোমাকে দিতেই হবে প্রিয়তমা।

আচ্ছা তুমি কি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে,
যদি আমি পরপারে চলে যাই একা করে?
এখনতো এক পলকের জন্যেও দূরে থাকতে পারো না।
তখন কেমন করে থাকবে একলা ঘরে,
আমার স্মৃতি কি তোমায় কাঁদাবে না?
নাকি ভুলেই যাবে যে আমি ছিলাম তোমার সাথে,
তোমার প্রতিটা নিঃশ্বাসে, প্রতিটা স্পর্শে,
প্রতিক্ষণে তোমার সাথে, তোমার পাশে।

বলো কি উত্তর দিতে চাও আমার প্রশ্নের?
আমি কান পেতে আছি তোমার উত্তরের।

ধরে নিলাম এখন তুমি আমায় ভালোবাস না,
আমার প্রতি তোমার আস্থা বিশ্বাস কিছুই নেই,
কিন্তু আমি কি একথা মেনে নিবো?
ভাবলে কি করে প্রিয়তমা, এমন কথা।
যদি ভাবতে পারো, উত্তর দিতে পারো,
আমি চলে যাবো, চিরতরে পরপারে,
অনন্ত আকাশের পানে চেয়ে দেখবে,
আমি কিভাবে আছি তোমায় ছেড়ে অন্ধকারে।

আচ্ছা আমি মরে গেলে তুমি কি খুশি?
নাকি কাঁদবে নিরবে নিভৃতে ভালোবেসে,
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে।

ভালোবাসার গভীরতা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

Wednesday, July 13, 2022

মনের মানুষ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন


তুমি আমার মনের মানুষ
তুমি আপন জন
তাইতো তোমায় মনে মনে
ভাবি সারাক্ষণ।।
হঠাৎ করে কাছে এলে
ভালোবেসে বুকে নিলে
দু'চোখ ভরে স্বপ্ন দিলে
রঙিন হলো আমার এ জীবন।।
এমনি করে কাছে থেকো
ভালোবেসে পাশে রেখো
মনের মানুষ করে তোমার
সারাটা জীবন।।

মনের মানুষ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

Friday, July 8, 2022

সুখের তরে -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

সবাইকে হাসি-খুশি রাখার দায়িত্ব তোকেই নিতে হবে,
তোর হাসি-খুশিতে কার-বা কি লাভ-ক্ষতি আছে।
জানিস না তোর জন্ম হয়েছে সবাইকে খুশি করতে।
জন্মেই তুই খুশি করেছিলি মা-বাবা, দাদা-দাদী,
নানা-নানী তোর কতো কাছের দূরের স্বজনকে।
তুই কি তা ভুলে গেলি, তোর কি তা মনে পড়েনা।
জন্মের পরপরই তুই কেঁদে উঠলি আর সবাই
হাসিতে ফেটে পড়ল, খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল।
তারপরে যতোই দিন গড়াতে লাগলো তোর
এই খুশি করার দায়দায়িত্ব বাড়তে লাগলো।
মনে পড়ে কি তোর সেদিনের কথা
যেদিন তুই স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হতে পারলি না
সবাই কি মন খারাপই না করেছিলো,
সেদিন কেউ তোর মনের অবস্থা দেখেনি
দেখেছে শুধু তাদের সম্মানের কথা,
তাদের স্বপ্ন পূরনের পথে বাধার কাটা।
এরপর থেকে আর তোকে এমন অবস্থা দেখতে হয়নি,
তুই সবাইকে খুশিই করে যাচ্ছিস
তোর মেধার দ্বারা, তোর শ্রমের দ্বারা,
যখন যেভাবে পারো, যতোটুকু পারো
সবাই তাতে খুশি, সবাই তোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
কিন্তু কেউ কি একবারও জানতে চেয়েছে
তুই কেমন আছিস, তোর কোন প্রয়োজন আছে কিনা?
কিংবা কেমন করে কাটছে তোর সময়
চায়নি তা জানতে আর চাইবেও না।
তুই মুখে বললেও কেউ শোনার সময় পাবে না,
যদি না তাদের তুই খুশি রাখতে পারিস।
সবাইকে খুশি রাখাই যে তোর কাজ।
তুই ভুলে যা তোর সুখের কথা,
তুই মনে করিস না তোর হাসি কান্নার কথা।
তুই যে পৃথিবীতে এসেছিস একা
আবার চলে যাবিও একা।
সেদিন সবাই কাঁদবে, বলবে তোর কথা
তোর দায়িত্ব যে ছিল তাদের সুখে রাখা।
তুই ভুলে যা তোর সব কথা,
তোর দায়িত্ব যে সবাইকে সুখে রাখা।
---------------------------------- 

 সুখের তরে -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
     ০৫/০৮/২০১৭

Saturday, July 2, 2022

কল্পকথা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

তুমি জানালায় দাড়িয়ে 

রিমঝিম বৃষ্টির ধারা দেখছিলে 

আর আমি অপলক দৃষ্টিতে

তোমার অমন সুন্দর চাহনি দেখছিলাম

জানিনা তুমি কি ভাবছিলে

তবে আমি তোমাকেই ভাবছিলাম

আমি ভাবছিলাম তোমার 

মায়া ভরা মুখ খানি

আর কি অপরুপ তোমার চাহনি

মানুষের দৃষ্টি যে এতো সুন্দর হতে পারে

তোমাকে না দেখলে জানা হতো না

তোমার ঐ অপলক দৃষ্টি দেখে

আমার দৃষ্টিও আর ফেরাতে পারলাম না

কিন্তু তুমি একবারের জন্যেও

আমার দিকে তাকালে না

তুমি বৃষ্টির ধারাই দেখলে

আর আমি শুধু তোমাকেই দেখলাম।।।

 


কল্পকথা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

   13/08/2015

আবুল মনসুর আহমদের 'আয়না' -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

 

'আয়না' -- সাতটি গল্পের একটি সংকলন, যা আবুল মনসুর আহমদের প্রথম বই। বইটি ১৮৩৫ সালে প্রকাশিত হয়। তবে বইয়ের গল্পগুলো ১৯২৬ সাল থেকে সওগাত-এ ছাপা হতে শুরু করছিল।
বইয়ের ভূমিকায় আয়নার ফ্রেম নামে কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, 'এমনি আয়নায় শুধু মানুষের বাইরের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়, কিন্তু আমার বন্ধু শিল্পী আবুল মনসুর যে আয়না তৈরী করেছেন, তাতে মানুষের অন্তরের রুপ ধরা পড়েছে।'
আয়না-র পটভূমি সমসাময়িক। তবে আজকের দিনেও এর বাস্তবতা বিদ্যমান, যদি আমরা একটু গভীরভাবে দেখি এবং চিন্তা করি। আনিসুজ্জামান স্যার তার এক লেখায় বলেছেন, 'আবুল মনসুর আহমদের আয়না দাঁড়িয়ে আছে তিন পায়ার ওপরে। তার ভাষার সরসতা ও বর্ণনার নাটকীয়তা; চরিত্রাঙ্কনের দক্ষতা; সমাজ বা গোষ্ঠীর একটা বিশেষ দিক পর্যবেক্ষণ করার অসামান্য ক্ষমতা।'
আয়নার প্রথম গল্প 'হুযুর কেবলা' ভন্ড পীরের গল্প। যেখানে দেখা যায় পীর সাহেব এক জায়গায় বসে রুহকে ছেড়ে দেন, রুহ সাত হাজার বছর কাটিয়ে আবার তার জেসমে প্রবেশ করে। আবার পীর সাহেব মুরিদের বউকে বিয়ে করার জন্য যে কৌশল অবলম্বন করেন তার সত্যি ধরা পড়লেও অন্ধ ভক্তির কারনে প্রতিবাদ হয়নি।
'গো-দেওতা-কা দেশ' গল্পে দেখা যায়, ইংরেজদের মন্ত্রণায় গোহত্যা নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ, শান্তি রক্ষার নামে ইংরেজ সৈন্য নিয়োজিত, হিন্দু-মুসলমানের পরস্পর নিধন, মনুষ্যহীন হয়ে শেষ পর্যন্ত দেশটি গো-দেবতার দেশ হয়ে যায়।
'নায়েবে নবী' গল্পে টাকার স্বার্থে মৌলভি সুধারামী যে বাস্তব সত্য অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হননি তাকে মিথ্যা প্রমাণের জন্য কোরআন হাদিসও ব্যবহার করেন।
ধর্মবিশ্বাসী মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইসমাইল সাহেব কিভাবে পত্রিকার মালিক হওয়া, অদ্বিতীয় নেতা হওয়া সহ আরো অনেক কিছুর বর্ণনা পাওয়া যায় 'লীডারে-কওম' গল্পে।
'মুজাহেদিন' গল্পে দেখা যায় আত্নপ্রতিষ্ঠার জন্য কিভাবে হানাফি-মোহাম্মাদি বিবাদ সৃষ্টি করে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগায় ধর্ম ব্যবসায়ীরা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে অশান্তি সৃষ্টি করে।
'বিদ্রোহী সংঘ' গল্পে দেখা যায়, কিভাবে একটা গ্রুপ মুখে বিশ্ব মানবতার কথা বলে, প্রথা বিরোধী কথা বলে, পরিবর্তনের কথা বললেও বাস্তবে তা করেনা। এমন বর্ণনা পাওয়া যাবে এই গল্পে।
মসজিদের সামনে হিন্দুদের বাদ্য বাজানো নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ এবং শেষ পর্যন্ত অনেক হিন্দু- মুসলমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তির মতো ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায় 'ধর্ম-রাজ্য' গল্পে।
আবুল মনসুর আহমেদ আজ থেকে এতো বছর পূর্বে যে ধর্মীয় গোঁড়ামি, রাজনৈতিক ভন্ডামি সহ সমাজের নানা অসঙ্গতি চিত্র 'আয়না' বইয়ে তুলে ধরেছেন, তা বর্তমান সমাজেও কোন না কোন ভাবে বিদ্যমান।
 
 
আবুল মনসুর আহমদের 'আয়না' -- মোঃ হেলাল উদ্দিন