পৃথিবীর প্রাচীনতম এক ঋষিমানব বলেছেন,
ইতর
শ্রেণির মানুষেরা আশপাশের মানুষ নিয়ে কথা বলে, মধ্য শ্রেণির মানুষেরা ঘটনা
নিয়ে কথা বলে, আর উচ্চশ্রেণির মানুষেরা আইডিয়া বা ফিলোসফি নিয়ে কথা বলে।
ঋষিমানবের
বক্তব্যের সূত্র দিয়ে এই গল্পের যুবক-যুবতীদের সভ্যদের শ্রেণিকরণ করা কঠিন
হয়ে যাবে। এরা একই সঙ্গে ইতর, মধ্য এবং উচ্চশ্রেণির প্রাণ।
আপনি শুধু বুদ্ধিবেশ্যা চিনেন, এই গল্পটা আপনাকে বুদ্ধি-গেলমান বিষয়েও ধারণা দিবে।
খুবই
ঝুঁকিপূর্ণ জীবন-যাপন করা একদল তরুণ-তরুণীর গল্প এটা। এদের কেউ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ রাজনীতির নেকড়ে, কেউ বিত্তবান ঘরের বখে যাওয়া
সন্তান, কেউ বেকার, কেউ ধার্মিক। কেউ আবার স্বপ্ন দেখে (নব্বইয়ের দশকের
সামাজিক সিনেমার মতো) একটা শান্ত-সৌম্য ইউটোপিয়ার। একটা নন্দিন জীবনের। কেউ
যাচ্ছে গোপনে, নানান এজেন্সির মাধ্যমে বিত্তবান ড্যাডি আর মাম্মিদের সঙ্গ
দিতে অভিজাত হোটেল। রিসোর্টে। প্রোগ্রামে। এরাই এখানে প্রোগ্রামার।
এদের
প্রত্যেকের কিছু ডাকনাম আছে, যেমন- রাষ্ট্রপতি, হযরত, পুরোহিত,
প্রোগ্রামার, জোড়াখোর, ফাকরানী, শোভাখানকি, উচ্চাখানকি... ইত্যাদি,
ইত্যাদি!
এদের একটা আড্ডাখানা আছে।
নাম শুঁড়িখানা। শুঁড়িখানা ভয়ংকর। দুর্বলচিত্তের মানুষদের জায়গা এইটা নয়।
ওরা এখানে যারা বসে (ওদের ভাষ্যে), একেকটা জাত বে-জন্মা।
বিদ্যা-বুদ্ধি-সাহসে বিকট। শিল্পে ও শিষ্টজ্ঞানে শাণিত। আড্ডায় এবং আলাপে
প্রবলভাবে যৌনায়িত। ওরা একই সাথে শ্রমিক এবং পুঁজিপতি। আত্মবিশ্বাসী এবং
আত্মঘাতী। ওরা বিশ্বাস করে, পৃথিবী এখনও পৃথিবীর সকল বুড়ো-বুড়িদের পাপেই
ভারগ্রস্থ হয়ে আছে, সেইখানে নতুন করে পাপ বাড়ানোর কোনো সুযোগ ওদের হাতে
নেই। ওরা তাই ভারহীন। পালকের মতো। উড়ে-উড়ে, উড়ছে; যৌবনে, মৌবনে—
এক
বসার পড়ে উঠার মতো একটা বই। তবে যাদের শব্দের ব্যবহার নিয়ে এলার্জি আছে
তাদের কাছে বইটি অশ্লীল লাগবে। অশালীন শব্দের ব্যবহারে বাস্তবতার বর্ণনাটা
বেশ জমে উঠেছে। বর্তমান বাংলার সার্বিক অবস্থার একটা চিত্র ফুটে উঠেছে
এখানে, যা সবাই ভাবে কিন্তু সাহস করে বলতে পারেনা। বইটি পড়ার মাধ্যমে এই না
বলতে পারার কষ্টটাও লাঘব হবে অনেকটা।
লেখক: মুহম্মদ নিজাম
প্রকাশনী: উপকথা প্রকাশন
মূল্য: ৩০০ টাকা
Md. Helal Uddin
01.07.2024
No comments:
Post a Comment