Thursday, December 14, 2023

শুধু জানতে চাই -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 আমি বলছি না আমাকে ভালোবাসতেই হবে

আমার সাথে প্রেমের গল্প করতে হবে

আমি বলছি না আমাকে বিয়ে করতে হবে

আমার পাশাপাশি সারা জীবন থাকতে হবে

আমি বলছি না আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।।


আমি শুধু জানতে চাই কেউ আমায় ভালোবাসতে পারে

আমার জন্য কারো হৃদয়ে একটুখানি প্রেম আছে

যার প্রেমে আমি হাবুডুবু খেতে পারি অনায়াসে

আমি শুধু বুঝতে চাই কেউ আমার প্রেমে পরতে পারে

আমার জন্য কারো চোখে একটু মায়া জমা আছে।।


আমি বলছি না আমাকেই তার জীবনসঙ্গী করতে হবে

আমার সাথে তার সারাটা জীবন কাটাতে হবে

আমি বলছি না তাকে আমার চোখে চোখে রাখতে হবে

আমার সাথে তার মিষ্টি মধুর সময় কাটাতে হবে

আমি বলছি না তার সময়টাকে থামিয়ে রাখতে হবে।।


আমি শুধু দেখতে চাই আমার ভালোবাসা কেউ বুঝেছে

আমার জন্য তার ভাবনায় একটু জায়গা আছে

যেই জায়গাতে আমার অবাধ বিচরণ হবে

আমি শুধু জানতে চাই আমায় ভাবার মানুষ আছে

আমায় সে ভালোবাসে সহ্য করে নিরব থাকে।।

শুধু জানতে চাই

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন



Thursday, December 7, 2023

অনামিকা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

অনামিকা
কি নাম দিব তোমার
অণিমা, তনিমা কিংবা
থাকুক না অনামিকা
নাম দিয়ে কি-বা হবে
তুমি যে তোমার তুলনা।।


অনামিকা
তুমি জানোনা
তোমায় দেখার পর
আমার মনের মাঝে সৃষ্টি হলো
অজানা এক ভালো লাগা
যে ভালো লাগার নেই কোন সীমানা।।


অনামিকা
তোমার ডাগর চোখের চাহনি দেখে
মনে হয় তুমিই জীবনানন্দের বনলতা
তোমার চোখে কাজল নেই জানি
তবুও দেখে মনে হয় বিধাতা নিজ হাতে
কাজল দিয়ে সাজিয়েছে দু'চোখ তোমার।।


অনামিকা
তোমার বাঁশির মতো নাক
নাকের ডগায় এক বিন্দু ঘাম
তোমায় করেছে অনন্যা
তাইতো তুমি হলে
অন্য সবার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।।


অনামিকা
তোমার গোলাপ ফোটা দু'টি ঠোট
ঠোটের কোণে এক চিলতে মিষ্টি হাসি
দেখে বার বার ইচ্ছে করে
তোমার প্রেমে নিজেকে করি বিলীন
হয়ে থাকি সারা জীবন তোমার প্রেম ভিখারী।।


অনামিকা
তোমার মেঘ কালো কেশের
মৃদু বাতাসে হালকা উড়োউড়ি
শ্রাবস্তীর কারুকাজকেও হার মানায়
মনে হয় বাধা পড়ে থাকি জীবনের তরে
চুলের বেনীর বাধনে তোমায় ভালোবেসে।।


অনামিকা
তোমার উপমার কোন শেষ হবে না
তোমার লতার মতো দেহখানা
সুউচ্চ বক্ষ ঢেউ খেলানো বাহু
হাটার তালে তালে তৈরি হওয়া ছন্দ
দেখে মনের মাঝে সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব।।


অনামিকা
কে তুমি? কি তোমার নাম
এসব না হয় নাইবা জানলাম
শুধু জেনে নিলাম
তুমি বিধাতার সৃষ্টি অম্লান
তুমি আমার ভালোবাসার নাম।।


অনামিকা
হয়তো তোমার সাথে আবার দেখা হবে
নয়তো আর কখনো হবে না দেখা
তাই বলে ভেবোনা তুমি থাকবে অদেখা
তুমি আছো, তুমি থাকবে
আমার চোখের মাঝে হৃদয়ের ভাঁজে।।


অনামিকা
তুমি থাকবে, আমার ভালোবাসা হয়ে
আমার জীবনের তরে, আমায় ভালোবেসে।।

 অনামিকা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
 

অনামিকা-০২ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

অনামিকা,
তোমার জন্য রেখেছি জমা
আমার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা
তোমার জন্য করছি এই আমি অপেক্ষা।
তোমার জন্য হৃদয়ে আছে আমার মায়া
তোমাকে পাবার জন্য আমার এই অপেক্ষা
তোমার জন্য আমার এইতো বেঁচে থাকা।
অনামিকা,
তোমার জন্য আমার স্বপ্ন চোখে দেখা
তোমার জন্য আমার মনে আসে ভাবনা
তোমার জন্য আমার সকল কবিতা লেখা।
তোমার জন্য হয় আমার সোনালী সকাল দেখা
তোমার জন্য ক্লান্ত দুপুর উদাস বিকেল বেলা
তোমার জন্য রাত্রি নিশি আমার জেগে থাকা।।
 
অনামিকা-০২ 

Sunday, December 3, 2023

মায়াবী কন্যা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

ওগো মায়াবী কন্যা
তোমার চোখে প্রেমের বন্যা
তোমার চোখের পানে চেয়ে
প্রেমের বানে যাচ্ছি আমি ভেসে।।
তোমার অপলক ডাগর চাহনি
হৃদয় কেড়েছে আমার যখন দেখেছি
তোমার চাহনির মায়ায় আমি পড়েছি
চোখ দেখেই তোমায় আমি ভালোবেসেছি।
ওগো মায়াবী কন্যা
তুমি ছাড়া আমি দিশাহারা
বলো তোমার মনের ঠিকানা
তোমার সাথে আমি করবো দেখা।
তোমায় পাবার জন্য আমি
দ্বীপান্তরে যেতে আছি রাজি
তুমি যদি বলো একবার ভালোবাসি
তোমার জন্য ধরতে রাজি জীবনবাজি।
ওগো মায়াবী কন্যা
অমন করে আর তাকিয়েও না
তুমি ছাড়া জীবন আমার বৃথা
একবার তুমি আমায় দেও দেখা।
 
মায়াবী কন্যা 

বুদ্ধদেব গুহ এর 'একটু উঞ্চতার জন্য' -- (পর্যালোচনা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন)

বুদ্ধদেব গুহ এর উপন্যাস 'একটু উঞ্চতার জন্য' প্রথম পড়েছিলাম মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষে। তখন দুই একটা উপন্যাস পড়লেও লেখার মূল বিষয়গুলো ভালো করে বুঝবার বা বিশ্লেষণের ক্ষমতা নিজের মধ্যে তৈরি হয়নি। সেই সময়ে এই উপন্যাসের মধ্যে প্রকৃতির প্রেমটাই বড় করে দেখা গিয়েছিলো, কিন্তু উপন্যাটি যতোটা না প্রকৃতি প্রেমের তারচেয়ে বেশি মানুষের বিশেষ করে নর-নারীর পারস্পারিক সম্পর্ক বিশ্লেষণের।

উপন্যাসের প্রথম প্রধান চরিত্র সুকুমার বোস, একজন নামকরা উকিল, সাথে সাথে তিনি লেখকও । দ্বিতীয় প্রধান চরিত্র রমা, যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সুকুমার। তৃতীয় প্রধান যে চরিত্র ছুটি, তিনি স্বাধীনচেতা এক নারী এবং লেখক সুকুমারের একনিষ্ঠ পাঠক। সুকুমার বোস তার পেশা ও লেখার ব্যস্ততার মাঝেও স্ত্রী, পুত্রের দায়িত্ব পালনে সচেতন থাকলেও সময়ে সাথে সাথে তাদের স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়ন শুরু হয়ে যায়। রমা স্বামীর সফলতা চাইলেও সে চাইতো তাকে বেশি সময় দেক, পার্কে ঘুরতে যাক, তাকে নিয়ে সিনেমা দেখুক। কিন্তু সুকুমার তার কাজের ব্যস্ততায় দু'জন দু'জনের থেকে দূরে চলে যায়। দুইজনের সম্পর্কে নেমে আসে শীতলতা। যতোদিনে ভুল বুঝতে পারেন ততোদিনে রমাও নিজেকে বদলে ফেলেন, যেখান থেকে ফিরে আসা ছিলো অসম্ভব।
 
এরই মাঝে হাজির হয় ছুটি, যে তার অফিস ছুটির দিনগুলোতে দূর রাচী থেকে দেখা করতে আসতো প্রিয় লেখক সুকুমার বোসের সাথে। সম্পর্কের শীতলতম সময়ে একটু উঞ্চতার ছোয়ায় তারা জড়িয়ে পড়ে নতুন একটা সম্পর্কে। যদিও সুকুমারের স্ত্রী, পুত্র ও পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীলতায় মাঝে মাঝেই দেখা করার সুযোগ হতো না, কিন্তু সম্পর্কে এড়িয়ে যেতে পারেনি। এদিকে রমা বোস আবার নতুন করে টান অনুভব করে স্বামীর প্রতি, ফিরে আসে সুকুমারের কাছে। কিন্তু সুকুমার, যে চেয়েছিলো সফলতা, ইচ্ছে ছিলো সুখী হবার, সে কি পারবে তা।
 
উপন্যাসের পার্শ্ব চরিত্রগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। একটি চরিত্রে আছেন এক নিঃসঙ্গ মানুষ মিঃ বোয়েলস, শৈলেন-নয়নতারা, লাবু, নুড়ানি, মিসেস কার্নি এবং প্যাট । প্রতিটি চরিত্রই আলাদা আলাদা। লাবুর জন্য অনেক মায়ার জন্ম হবে মনে, সাথে শৈলেনের জন্য মন খারাপ করবেন। প্যাটের মধ্যে আছে এক সংগ্রামী মনোভাব। এই চরিত্রগুলি উপন্যাসটিকে করেছে আরো পরিপূর্ণ।
 
মোটকথা, উপন্যাসের মধ্যে লেখকের প্রকৃতি প্রেমের এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোমুগ্ধকর বর্ণনার সাথে সাথে নর-নারীর সম্পর্কের এক অসাধারণ বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে। এই দুই মিলে উপন্যাসটি হয়ে উঠেছে অতুলনীয়।
 

 একটু উঞ্চতার জন্য -- বুদ্ধদেব গুহ 
(পর্যালোচনা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন)