Saturday, February 4, 2023

নীল খামে বেদনার চিঠি -- মোঃ হেলাল উদ্দিন


বেদনার রঙ নীল কিংবা নীল রঙের বেদনা এমন একটা কথা আমাদের সকলেরই জানা।

এই কথা বিশ্বাস করে সাথী। তাই নীল খাম আর নীল কলম নিয়ে নিস্তব্ধ নিশিতে সাথী চেয়ারে বসেছে তার মনে জমে থাকা বেদনার কথাগুলো লিখতে।

কিন্তু কি লিখবে সাথী? শুরু করবে কোথা থেকে তার মনে জমে থাকা বেদনার কথাগুলো এমন ভাবতে ভাবতে চোখ ঝপসা হয়ে আসছে। সময়তো বেশি হয়নি তবু কেন তার এমন লাগছে, মনে হয় হাজার বছর দেখা হয়নি সবুজের সাথে, কথা হয়নি কখনো দু'জনের। কিন্তু তাতো নয়। সবুজ কি করে, কোথায় আছে সবাই সাথীর জানা। তবু কেন এমন মনে হয়। কেন আজ তার কথা মনে পরতে বৈশাখের রৌদ ঝলমলে আকাশে হঠাৎ জমে যাওয়া মেঘের মতো ঝাপসা হয়ে আসছে সব স্মৃতি। বৈশাখের কালো মেঘে আকাশ ছেড়ে গেলেও কোথাও যেমন একটু সূর্যের আলোর সন্ধান পাওয়া যায় তেমনি সাথীর ঝপসা হয়ে যাওয়া চোখের এক কোনে সবুজের সাথে কাটানো সুখস্মৃতি উকিঁ দিচ্ছে। সে লিখতে শুরু করেছে তার বেদনার চিঠি।

প্রিয় সবুজ,

কেমন আছো?

কতোদিন হলো তোমার সাথে কথা হয়না। দেখা হয়না বহুদিন। সেই কবিতার মতো দেখেছিলাম কবে, কোন বৃহস্পতিবারে, মনে হয় এক কোটি বছর তোমার সাথে দেখা নাই। আসলেই কি তাই? তোমার সাথে শেষ দেখার সময়টা কি এতোদিন হয়ে গেছে।

আচ্ছা, তোমার কি আমাকে মনে পড়ে? নাকি ভুলে গেছো আজ সব। তোমার হৃদয়ে আজ অন্য কোন যুবতীর বাস। যতোদূর জানি তোমার পড়ালেখা এখন শেষ হয়নি। তবে কি ক্লাসের কোন বান্ধবী আজ তোমার প্রেমের নতুন সারথী, যেমন আমাকে রাখতে প্রতিটা ক্লাস পিরিয়ডে একই বেঞ্চে তোমার পাশে।

সবুজ, মনে পড়ে আমাদের প্রথম দেখার কথা? আমি কলেজের ক্লাসরুমে একা বসেছিলাম। কোথা থেকে তুমি দৌঁড়ে এসে আমায় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে তুমি পাশে বসলে। তোমার ধাক্কায় আমি পরে যাচ্ছিলাম প্রায়, কিন্তু কেমন করে ধরলে। আমার তখন মনে হচ্ছিল কোন ঝড়ো বাতাস আমায় উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর কোন আপন হাত শক্ত করে আমায় ধরে আছে যেন কোন বিপদ আমায় স্পর্শ করতে না পারে।

একটু স্বাভাবিক হতে অনুভব করলাম কোন এক অজানা ভালো লাগা হৃদয়ে বয়ে যাচ্ছে। সমস্ত শরীরজুড়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি বয়ে চলছে। মনে হচ্ছিল এমন একটা শক্ত হাত আমার হাতে ধরা দরকার। কিন্তু আমি তোমার সাথে রাগ করে, কড়া কিছু কথা শুনিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলাম।

মনে আছে তোমার সেই দিনের কথা। এরপরে কতোবার সরি বলার চেষ্টা করেছিলা। কিন্তু আমি কোন পাত্তাই দিতেছিলাম না। আসলে এটা তোমার প্রতি রাগ থেকে করিনি, শুধু তোমাকে যাচাই করে দেখছিলাম। আমি আবার গানের সেই কথা, বাজারে যাচাই করে দেখিনি তো দাম, সোনা কিনিলাম নাকি রুপা কিনিলাম, এই ভালোবাসায় বিশ্বাস করিনা। তাই তোমাকে ভালো লাগলেও যাচাই করে দেখছিলাম। যদিও জানতাম না তুমি আমায় ভালোবাস কিনা, নাকি এমনিতেই সেদিন এমন করেছিলা। তবে বুঝতেছিলাম, সেদিনের করা তোমার কান্ড ছিলো পরিকল্পিত।

সবুজ, তোমার সাথে কিছুদিনের মধ্যেই সুন্দর একটা সম্পর্ক হয়ে গেলো। কতো মধুর ছিলো সেই দিনগুলো মনে আছে তোমার। জানি তুমি ভুলতে পারোনি, যেমন ভুলতে পারিনি আমি। তোমার সাথে পাশাপাশি বসে ক্লাস করা, ক্লাসের মাঝে তোমার দুষ্টমি কখনো স্যারের রাগান্বিত চোখ বা ক্লাসের অন্যদের বাঁকা কথা শুনে কাটাতে হয়েছে সবই আমার মনের কোণে জমা রয়েছে, শুধু তুমি নেই আমার মনের মাঝে। আমার মনের ঘরে আজ অন্য পুরুষের বাস।

কেন এমন হলো? কেন তুমি হলে না আমার মনের সেই পুরুষ। না, তোমাকে দোষ দিচ্ছি না আমার দোষ ছিলো। আসলে পরিস্থিতি আমাদের বাধ্য করেছে আলাদা হতে, দুইজনকে দুই প্রান্তে রাখতে। দুইটা বছর কতো আনন্দে কেটেছে। কতো খুনসুটি, কতো মান-অভিমান। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ সবই স্মৃতি।

তোমার চোখে বড় হবার স্বপ্ন। ভর্তি হলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। আমি রয়ে গেলাম সাধারণ শিক্ষায়। বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। তাদের ছেড়ে দূরে যেতে পারিনি। আর তাই হয়তো আজ আমি তোমার থেকে দূরে। চোখের আড়াল হলে নাকি মানুষ মনের আড়াল হয়ে যায় কথাটা তেমন বিশ্বাস করতাম না, কিন্তু আজ তা সত্যিই আমার জীবনে।

তুমি ব্যস্ত লেখাপড়া নিয়ে। এদিকে বাবা পাত্র দেখতে লাগলো। আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছে ছিলো কিন্তু বাবা মায়ের জোড়াজুড়িতে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে বাধ্য হলাম। আর করারই বা কি ছিলো বলো? তোমার কাছে তো গিয়েছিলাম। আমাকে ধরে রাখার সেই আগ্রহ তখন তোমার ছিলো না। যেমন ছিলো তোমার সাথে দেখা হবার প্রথম দিন কিংবা পাশাপাশি থাকার দিনগুলোতে। তাই আমার জীবনে আগমন ঘটলো,,,,,,

(২)

সজলের কথা মনে হতেই সাথীর ঘোর কেটে গেলো, যেমন বৈশাখের ঝড় হঠাৎ আসে হঠাৎ ই থেমে যায়।

সাথীর বিয়ে হয়েছে প্রায় চার বছর হলো। বেশ সুখেই কাটছিলো তাদের বিবাহিত দিনগুলো। যদিও সজলের চাকুরির কারনে দূরে থাকতে হতো আবার সাথীও পড়ালেখা করতো। কিন্তু সুখের সময়গুলো সাথীর জীবনে বেশি স্থায়ী হতে চায় না। সুখ যেন সাথীর জন্য বালির বাধঁ। বালি দিয়ে বাধঁ দিলে তা যেমন পানিতে ভেসে যায়, তেমনি সাথীর সুখগুলো তার দু'চোখে জলে ভেসে যায় প্রতিনিয়ত। তা নাহলে কেন সব ভুলে বিয়ের পর যাকে নিয়ে সুখের স্বপ্ন দেখছে, সুন্দর দিন কাটাচ্ছে তার সাথেই আবার আলাদা হয়ে থাকতে হচ্ছে। ছোট একটা দুর্ঘটনা কেন সব এলোমেলো করে দিচ্ছে। এমন সব ভাবতে গিয়ে সাথী আবার নীল খামের দিকে তাকায়। সে নীল কলমে নীল বেদনাগুলো লেখা শুরু করে।

প্রিয় সজল,

তুমি কেমন আছো জানি। শুধু জানি না কেন তুমি দূরে আছো। কেন তুমি চাওনা আমি তোমার কাছে থাকি। তোমায় নিয়ে সুখের একটা সংসার করি। কেন তুমি নিজেকে আড়াল করে রাখো। তোমার কাজ, তোমার সারাদিনের ব্যস্ততা তোমায় কি আমার থেকে দূরে রাখে, নাকি শুধুই তোমার ইচ্ছের অভাব। সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে বাসায় ফিরে ক্লান্ত যখন তোমার শরীর খাটে শুয়ে পরে তখনও কি একবারের জন্য আমার কথা স্মরণে আসেনা তোমার।

তোমার সাথে শেষ কবে কথা হয়েছে ঠিক মনে নেই। কথা বলতে মনের কথা, ভালো লাগা, ভালোবাসার কথা। বিশেষ কোন প্রয়োজনে তুমি কল দেও আর ঐ একটা বা দুইটা কথাই তোমার ফোন কলের দৈর্ঘ্য। একবারের জন্যও জানতে চাওনা আমি কেমন আছি? আমি কেমন করে তোমায় ছাড়া থাকি। কখন জানার প্রয়োজন মনে করো না।

আমি কি ভুল করেছে? কেন আমার সাথে এমন করো। সবার পছন্দে, সবাইকে নিয়েই তো আমাদের বিয়ে, আমাদের সংসার জীবনের যাত্রা। ভালোই তো চলছিলো আমাদের সুখের ছোট সংসার। আমার পড়ার ফাঁকে, তোমার কাজের শেষে জোসনা রাতে দূর আকাশের চাঁদের আলোয় খোলা ছাদে কতো কথা হতো। চাঁদের আলোয় তুমি আমার দিকে তাকিয়ে কতো বার বলতে প্রিয়তমা, 'তুমি আমার জীবনে এই চাঁদের মতো। তোমার আলোয় আমার জীবন আলোকিত। এই আলোয় দেহ দগ্ধ হবার তাপ নেই, নেই ঝলসে যাবার কোন ভয়। এ আলো দেয় প্রেমের উষ্ণতা, দেহ-মনকে করে শিহরিত।' এমন কতো কথা।

কিন্তু আজ তুমি সব ভুলে কেমন করে থাকো আমায় ছাড়া। আজ কি তোমার শিহরিত হতে ইচ্ছে করে না? ইচ্ছে করে আবার কোন জোসনা রাতে ঝিরঝির বাতাসে এক কাপ কফিতে দু'জনে চুমুক দিতে দিতে সুখের স্বপ্ন দেখতে। একটা সুন্দর সংসার গড়তে, যেখানে তুমি আমি আর আমাদের প্রেমের ফসল ফুটফুটে একটা বাবু ঘরের এ কোণ থেকে ও কোণে দৌড়ে বেড়াবে। এমন কোন ভাবনা কি তোমার মনে আর আসে না। আমি কিন্তু প্রতি মুহুর্তে এমন স্বপ্নে আজও বিভোর থাকি।

আমি স্বপ্নে কি জাগরণে সব সময় তোমায় নিয়ে ভাবি। তোমার ভাবনা আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে। আমি চাই তুমিই থাকো আমার জীবনসঙ্গী হয়ে, আমার ভালোবাসার দুনিয়ায় তোমাকে ছাড়া আর কাউকে চাই না। তুমি কি বুঝতে পারো না আমাকে? মানুষের জীবনে নানান ধরনের বাঁধা আসতে পারে, বিপদ হতে পারে, কতো ঘাতপ্রতিঘাতেও তো মানুষ টিকে থাকে। একটা দুর্ঘটনা কি একটা সম্পর্কে শেষ করে দিতে পারে। ঝড়ের রাতে তো কতো গাছ ভেঙ্গে পারে তাই বলে কি বাগান শুণ্য থাকে। সেখানে তো নতুন করে আবার সৃষ্টি হয় গাছের, বাগানের। তেমনি করে সব ভুলে গিয়ে কি আবার এক হতে পারিনা আমরা।

তোমাকে এতো কথা বলেই বা লাভ কি? তুমি তো মনে করো তোমার অবহেলায় হয়তো আমি অন্য কোথাও যত্ন পাবার স্বপ্নে বিভোর,,,,,,

(৩)

হঠাৎ করেই কলম থেমে গেল সাথীর। আসলেই কি সে অন্য কারো যত্নের স্বপ্নে বিভোর? এমন ভাবনায় মনে পরলো শাওনের কথা।

শাওনের সাথে সাথীর পরিচয় কোন একটা স্বনামধন্য এনজিওতে ভাইভা দেয়ার সূত্রে। সাথীকে দেখে শাওন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো অনেক সময়। কি ভাবছিলো শাওন তখন এটা মনে করতেই সাথী চোখ স্পর্শ করে। আসলেই কি সাথীর চোখ এতো সুন্দর। শাওন বড় কর্মকর্তা। কাজের কতো ব্যস্ততা। সাথে স্ত্রী, সন্তানের দেখাশোনা কতো কি করতে হয় তাকে। এরমধ্যেও সাথীকে নিয়মিত ফোন করে। নানান ধরনের খোঁজ খবর নেয়। প্রথম যেদিন ফোন কলে কথা হয় সেই স্মৃতি মনে করে সাথী কেমন যেন আনমনে হয়ে গেলো। ফোন করে কি সুন্দর করে সাথীর চোখের, চুলের প্রশংসায় বিভোর করে দিলো। জীবনানন্দে কবিতা কোট করে শাওন বলতেছিলো, 'চুল তার কবে কার অন্ধকার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য। ' 'পাখির বাসার মতো দু'টি চোখ তোমার, ঠিক যেন নাটরের বনলতা সেন।' 

সাথীর খুব হাসি পায়। শাওনকে বলে আপনার কি হয়েছে? আমাকে ইমপ্রেস করতে কি সব আবোলতাবোল বকছেন। সাথীর হাসি থামিয়ে দিয়ে শাওন বললো আবোলতাবোল নয়, আমি তোমার চাহনির মায়ায় পরেছি। তোমার মায়ায় ভরা চোখ, গোলাপফোটা ঠোঁটের হাসি আমায় মুগ্ধ করেছে। আমি তোমাতে হারিয়ে যাচ্ছি।

কথাগুলো ভালো লাগে সাথীর। সাথী মনে মনে ভাবতে থাকে কতো সুন্দর করে কথা বলছে শাওন। একজন মানুষ এতো সুন্দর করে মানুষকে হাসাতে পারে, খুশি করতে পারে তা শাওনের সাথে কথা না হলে জানা হতো না সাথীর। তাই নিয়মিত কথা হতে থাকে দু'জনের। কখনো কাজের ফাঁকে, কখনো রাতের আধাঁরে নিঝুম নিস্তব্ধ ক্ষণে সারারাত্রি কথা হতে থাকে। দু'জনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা, মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা চাপা বেদনারা বের হতে থাকে শাওন সাথীর ফোনালাপ জুড়ে। ভালোবেসে ফেলে হয়ত দু'জন দু'জনকে কিন্তু কেউ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। সময়ের বাস্তবতায় সব কথা বলা যায় না। অনেক কথা বুকের মাঝেই চাপা রাখতে হয়, নিজের ভালো থাকার জন্য কিংবা অন্যকে ভালো রাখার জন্য।

সাথী আবার ফিরে যায় কলেজের সেই সুখময় স্মৃতিতে। সবুজ সাথী কি সুন্দর নামের মিল। বিধাতা মনে হয় এক সাথে থাকার জন্যই সৃষ্টি করেছে। কিন্তু একসাথে থাকা হয়নি বেশি দিন। কিন্তু সজলকে তো সারা জীবনের জন্য চাই। সারাজীবনের সঙ্গী হিসাবেই তো সজল আমার জীবনে আসল বিয়ে করে। তবু কেন একসাথে থাকতে পারছিনা। একটা সুখের সংসার হচ্ছে না। আমি তো চাই সজলকে নিয়েই বাকি জীবনটা পারি দিতে। সাথী এমন সব ভাবতে ভাবতেই নীল খামের দিকে তাকিয়ে লিখতে শুরু করে তার বেদনার নীল কথা।

প্রিয় শাওন,

অনেক দিন থেকেই ভাবছি একটা কথা বলবো কিন্তু কখনো বলা হয়নি। বলতে পারো সাহস হয়নি। হয়তো কখনো বলাও হবে না যে, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার ভালো লাগায়, মন্দ লাগায়, তোমার যত্নে, ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। নিজের অজান্তে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। জানি তুমিও আমাকে ভালোবাসো কিন্তু তোমার বাস্তববাদী চিন্তার জগতে শত যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বেঁচে থাকলেও সংসার রেখে অন্য মেয়ের জীবনে আসতে চাইবেনা। তুমি আমার জীবনে আসো তা আমিও চাইনা। কারন আমিও চাই আমার সজলের সাথেই জীবন পার করি। কিন্তু তার অবহেলা আমায় কষ্ট দেয়। আমায় হৃদয়কে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। আমি কি করব বুঝতে পারিনা।

শাওন, তোমার কেয়ারিং, তোমার রোমান্টিকতা আমায় টানে কিন্তু তোমার কাছে যাবো সেই সুযোগও তুমি রাখনি। তুমি এমনই এক সময় আমার জীবনে এসেছো যখন না পারো আমায় গ্রহণ করতে, না পারি আমি তোমার জীবনে যেতে। কেমন এক শাঁখেরকরাতে ফেলে দিলে আমায়। আমি আজ অসহায়। আমার জীবনে কোন সুখ স্থায়ী হতে চায় না। জানিনা আমার জীবনে কি হবে। আজ সব ছেড়ে দিয়েছি বিধাতার হাতে। দেখি তিনি আমায় কি জন্য কি রেখেছেন শেষ পর্যন্ত।

আচ্ছা এতো কথা কেন তোমাকে বলছি। তোমাকে নিয়ে কেন এতো স্বপ্ন দেখি। তুমি তো আমার হবে না বলেই দিয়েছো, আমিও যে বলিনি তা নয়। আমরা তো দু'জনেই চাইনা দু'জনের হতে তবু কেন ভালোবাসি, কেন কাছে আসার স্বপ্নে বিভোর। দিনেরাতে, ক্ষণে ক্ষণে তোমায় ভাবি। জানিনা কেন এমন হলো আমার। দিন কাটে তো রাত কাটেনা, রাত কাটে তো ভোরের সূর্য দেখিনা। এমন কেন হলো বলতে পারো শাওন,,,,,,

সাথী আর ভাবতে পারছে না। কেন লিখছে এই চিঠিগুলো। কারও কাছে তো পাঠানো হবে না কোন একটা চিঠি। তবুও কেন এতো কথা লিখে রাখা। বেদনার নীল আকাশে নীল রঙের কালিতে লেখা চিঠি নীল খামের ভিতর লুকিয়ে কেঁদে যাবে চিরদিন। কারো মনের আকাশে একবিন্দু জায়গা হবে না এই কথাগুলোর।  এমন ভাবতে ভাবতে চোখের দু'ফোটা জল গড়িয়ে পরলো হাতের কলমে আর মনে বেজে উঠলো সেই সুর, 'না, না কিচ্ছু চাইনি আমি আজীবন ভালোবাসা ছাড়া, আমিও তাদেরই দলে বারবার মরে যায় যারা'।

নীল খামে বেদনার চিঠি 

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন

No comments:

Post a Comment