Monday, February 13, 2023

বসন্তে ভালোবাসা -- মোঃ হেলাল উদ্দিন


 ভাবনায় আজ বসন্ত নয়, বসন্ত আজ বাস্তবতায়।

ফাগুনের ছোয়া আজ মনে লাগে, প্রকৃতিতে নয়।

কবির কথাই আজ স্মরি বারে ফুল ফুটুক আরা

নাই ফুটুক বসন্ত এসেছে দ্বারে, হৃদয় দোলাতে।

ফাগুনের আগুন লাগা ভালোবাসার দ্বি-প্রহরে

ভরাতে হৃদয় এসেছে ভ্যালেন্টাইন ডে, ভূবনে।

শিশিরের ন্যায় হতে সিক্ত হৃদয়, ভালোবাসায়

দু'টি ডগা যেন মিলে যায় একটি শিশির কণায়।

এই জগত সংসারের ভবলীলায় বোঝা বড় দায়,

সত্যিকারের ভালোবাসা কারে কয়, কোন নমুনায়।

ফাগুনের আগুনে পুড়ে দু'টি হৃদয়, বসন্তের বাতাসে

নিভে অন্তর খাটি হয় এরই নাম ভালোবাসা হয়।

ভালোবাসায় সিক্ত হোক প্রতিটি হৃদয়, 

মানবের তরে হোক ভালোবাসার জয়। 

 

বসন্তে ভালোবাসা

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন

১৪/০২/২০১৮

Saturday, February 4, 2023

নীল খামে বেদনার চিঠি -- মোঃ হেলাল উদ্দিন


বেদনার রঙ নীল কিংবা নীল রঙের বেদনা এমন একটা কথা আমাদের সকলেরই জানা।

এই কথা বিশ্বাস করে সাথী। তাই নীল খাম আর নীল কলম নিয়ে নিস্তব্ধ নিশিতে সাথী চেয়ারে বসেছে তার মনে জমে থাকা বেদনার কথাগুলো লিখতে।

কিন্তু কি লিখবে সাথী? শুরু করবে কোথা থেকে তার মনে জমে থাকা বেদনার কথাগুলো এমন ভাবতে ভাবতে চোখ ঝপসা হয়ে আসছে। সময়তো বেশি হয়নি তবু কেন তার এমন লাগছে, মনে হয় হাজার বছর দেখা হয়নি সবুজের সাথে, কথা হয়নি কখনো দু'জনের। কিন্তু তাতো নয়। সবুজ কি করে, কোথায় আছে সবাই সাথীর জানা। তবু কেন এমন মনে হয়। কেন আজ তার কথা মনে পরতে বৈশাখের রৌদ ঝলমলে আকাশে হঠাৎ জমে যাওয়া মেঘের মতো ঝাপসা হয়ে আসছে সব স্মৃতি। বৈশাখের কালো মেঘে আকাশ ছেড়ে গেলেও কোথাও যেমন একটু সূর্যের আলোর সন্ধান পাওয়া যায় তেমনি সাথীর ঝপসা হয়ে যাওয়া চোখের এক কোনে সবুজের সাথে কাটানো সুখস্মৃতি উকিঁ দিচ্ছে। সে লিখতে শুরু করেছে তার বেদনার চিঠি।

প্রিয় সবুজ,

কেমন আছো?

কতোদিন হলো তোমার সাথে কথা হয়না। দেখা হয়না বহুদিন। সেই কবিতার মতো দেখেছিলাম কবে, কোন বৃহস্পতিবারে, মনে হয় এক কোটি বছর তোমার সাথে দেখা নাই। আসলেই কি তাই? তোমার সাথে শেষ দেখার সময়টা কি এতোদিন হয়ে গেছে।

আচ্ছা, তোমার কি আমাকে মনে পড়ে? নাকি ভুলে গেছো আজ সব। তোমার হৃদয়ে আজ অন্য কোন যুবতীর বাস। যতোদূর জানি তোমার পড়ালেখা এখন শেষ হয়নি। তবে কি ক্লাসের কোন বান্ধবী আজ তোমার প্রেমের নতুন সারথী, যেমন আমাকে রাখতে প্রতিটা ক্লাস পিরিয়ডে একই বেঞ্চে তোমার পাশে।

সবুজ, মনে পড়ে আমাদের প্রথম দেখার কথা? আমি কলেজের ক্লাসরুমে একা বসেছিলাম। কোথা থেকে তুমি দৌঁড়ে এসে আমায় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে তুমি পাশে বসলে। তোমার ধাক্কায় আমি পরে যাচ্ছিলাম প্রায়, কিন্তু কেমন করে ধরলে। আমার তখন মনে হচ্ছিল কোন ঝড়ো বাতাস আমায় উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর কোন আপন হাত শক্ত করে আমায় ধরে আছে যেন কোন বিপদ আমায় স্পর্শ করতে না পারে।

একটু স্বাভাবিক হতে অনুভব করলাম কোন এক অজানা ভালো লাগা হৃদয়ে বয়ে যাচ্ছে। সমস্ত শরীরজুড়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি বয়ে চলছে। মনে হচ্ছিল এমন একটা শক্ত হাত আমার হাতে ধরা দরকার। কিন্তু আমি তোমার সাথে রাগ করে, কড়া কিছু কথা শুনিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলাম।

মনে আছে তোমার সেই দিনের কথা। এরপরে কতোবার সরি বলার চেষ্টা করেছিলা। কিন্তু আমি কোন পাত্তাই দিতেছিলাম না। আসলে এটা তোমার প্রতি রাগ থেকে করিনি, শুধু তোমাকে যাচাই করে দেখছিলাম। আমি আবার গানের সেই কথা, বাজারে যাচাই করে দেখিনি তো দাম, সোনা কিনিলাম নাকি রুপা কিনিলাম, এই ভালোবাসায় বিশ্বাস করিনা। তাই তোমাকে ভালো লাগলেও যাচাই করে দেখছিলাম। যদিও জানতাম না তুমি আমায় ভালোবাস কিনা, নাকি এমনিতেই সেদিন এমন করেছিলা। তবে বুঝতেছিলাম, সেদিনের করা তোমার কান্ড ছিলো পরিকল্পিত।

সবুজ, তোমার সাথে কিছুদিনের মধ্যেই সুন্দর একটা সম্পর্ক হয়ে গেলো। কতো মধুর ছিলো সেই দিনগুলো মনে আছে তোমার। জানি তুমি ভুলতে পারোনি, যেমন ভুলতে পারিনি আমি। তোমার সাথে পাশাপাশি বসে ক্লাস করা, ক্লাসের মাঝে তোমার দুষ্টমি কখনো স্যারের রাগান্বিত চোখ বা ক্লাসের অন্যদের বাঁকা কথা শুনে কাটাতে হয়েছে সবই আমার মনের কোণে জমা রয়েছে, শুধু তুমি নেই আমার মনের মাঝে। আমার মনের ঘরে আজ অন্য পুরুষের বাস।

কেন এমন হলো? কেন তুমি হলে না আমার মনের সেই পুরুষ। না, তোমাকে দোষ দিচ্ছি না আমার দোষ ছিলো। আসলে পরিস্থিতি আমাদের বাধ্য করেছে আলাদা হতে, দুইজনকে দুই প্রান্তে রাখতে। দুইটা বছর কতো আনন্দে কেটেছে। কতো খুনসুটি, কতো মান-অভিমান। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ সবই স্মৃতি।

তোমার চোখে বড় হবার স্বপ্ন। ভর্তি হলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। আমি রয়ে গেলাম সাধারণ শিক্ষায়। বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। তাদের ছেড়ে দূরে যেতে পারিনি। আর তাই হয়তো আজ আমি তোমার থেকে দূরে। চোখের আড়াল হলে নাকি মানুষ মনের আড়াল হয়ে যায় কথাটা তেমন বিশ্বাস করতাম না, কিন্তু আজ তা সত্যিই আমার জীবনে।

তুমি ব্যস্ত লেখাপড়া নিয়ে। এদিকে বাবা পাত্র দেখতে লাগলো। আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছে ছিলো কিন্তু বাবা মায়ের জোড়াজুড়িতে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে বাধ্য হলাম। আর করারই বা কি ছিলো বলো? তোমার কাছে তো গিয়েছিলাম। আমাকে ধরে রাখার সেই আগ্রহ তখন তোমার ছিলো না। যেমন ছিলো তোমার সাথে দেখা হবার প্রথম দিন কিংবা পাশাপাশি থাকার দিনগুলোতে। তাই আমার জীবনে আগমন ঘটলো,,,,,,

(২)

সজলের কথা মনে হতেই সাথীর ঘোর কেটে গেলো, যেমন বৈশাখের ঝড় হঠাৎ আসে হঠাৎ ই থেমে যায়।

সাথীর বিয়ে হয়েছে প্রায় চার বছর হলো। বেশ সুখেই কাটছিলো তাদের বিবাহিত দিনগুলো। যদিও সজলের চাকুরির কারনে দূরে থাকতে হতো আবার সাথীও পড়ালেখা করতো। কিন্তু সুখের সময়গুলো সাথীর জীবনে বেশি স্থায়ী হতে চায় না। সুখ যেন সাথীর জন্য বালির বাধঁ। বালি দিয়ে বাধঁ দিলে তা যেমন পানিতে ভেসে যায়, তেমনি সাথীর সুখগুলো তার দু'চোখে জলে ভেসে যায় প্রতিনিয়ত। তা নাহলে কেন সব ভুলে বিয়ের পর যাকে নিয়ে সুখের স্বপ্ন দেখছে, সুন্দর দিন কাটাচ্ছে তার সাথেই আবার আলাদা হয়ে থাকতে হচ্ছে। ছোট একটা দুর্ঘটনা কেন সব এলোমেলো করে দিচ্ছে। এমন সব ভাবতে গিয়ে সাথী আবার নীল খামের দিকে তাকায়। সে নীল কলমে নীল বেদনাগুলো লেখা শুরু করে।

প্রিয় সজল,

তুমি কেমন আছো জানি। শুধু জানি না কেন তুমি দূরে আছো। কেন তুমি চাওনা আমি তোমার কাছে থাকি। তোমায় নিয়ে সুখের একটা সংসার করি। কেন তুমি নিজেকে আড়াল করে রাখো। তোমার কাজ, তোমার সারাদিনের ব্যস্ততা তোমায় কি আমার থেকে দূরে রাখে, নাকি শুধুই তোমার ইচ্ছের অভাব। সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে বাসায় ফিরে ক্লান্ত যখন তোমার শরীর খাটে শুয়ে পরে তখনও কি একবারের জন্য আমার কথা স্মরণে আসেনা তোমার।

তোমার সাথে শেষ কবে কথা হয়েছে ঠিক মনে নেই। কথা বলতে মনের কথা, ভালো লাগা, ভালোবাসার কথা। বিশেষ কোন প্রয়োজনে তুমি কল দেও আর ঐ একটা বা দুইটা কথাই তোমার ফোন কলের দৈর্ঘ্য। একবারের জন্যও জানতে চাওনা আমি কেমন আছি? আমি কেমন করে তোমায় ছাড়া থাকি। কখন জানার প্রয়োজন মনে করো না।

আমি কি ভুল করেছে? কেন আমার সাথে এমন করো। সবার পছন্দে, সবাইকে নিয়েই তো আমাদের বিয়ে, আমাদের সংসার জীবনের যাত্রা। ভালোই তো চলছিলো আমাদের সুখের ছোট সংসার। আমার পড়ার ফাঁকে, তোমার কাজের শেষে জোসনা রাতে দূর আকাশের চাঁদের আলোয় খোলা ছাদে কতো কথা হতো। চাঁদের আলোয় তুমি আমার দিকে তাকিয়ে কতো বার বলতে প্রিয়তমা, 'তুমি আমার জীবনে এই চাঁদের মতো। তোমার আলোয় আমার জীবন আলোকিত। এই আলোয় দেহ দগ্ধ হবার তাপ নেই, নেই ঝলসে যাবার কোন ভয়। এ আলো দেয় প্রেমের উষ্ণতা, দেহ-মনকে করে শিহরিত।' এমন কতো কথা।

কিন্তু আজ তুমি সব ভুলে কেমন করে থাকো আমায় ছাড়া। আজ কি তোমার শিহরিত হতে ইচ্ছে করে না? ইচ্ছে করে আবার কোন জোসনা রাতে ঝিরঝির বাতাসে এক কাপ কফিতে দু'জনে চুমুক দিতে দিতে সুখের স্বপ্ন দেখতে। একটা সুন্দর সংসার গড়তে, যেখানে তুমি আমি আর আমাদের প্রেমের ফসল ফুটফুটে একটা বাবু ঘরের এ কোণ থেকে ও কোণে দৌড়ে বেড়াবে। এমন কোন ভাবনা কি তোমার মনে আর আসে না। আমি কিন্তু প্রতি মুহুর্তে এমন স্বপ্নে আজও বিভোর থাকি।

আমি স্বপ্নে কি জাগরণে সব সময় তোমায় নিয়ে ভাবি। তোমার ভাবনা আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে। আমি চাই তুমিই থাকো আমার জীবনসঙ্গী হয়ে, আমার ভালোবাসার দুনিয়ায় তোমাকে ছাড়া আর কাউকে চাই না। তুমি কি বুঝতে পারো না আমাকে? মানুষের জীবনে নানান ধরনের বাঁধা আসতে পারে, বিপদ হতে পারে, কতো ঘাতপ্রতিঘাতেও তো মানুষ টিকে থাকে। একটা দুর্ঘটনা কি একটা সম্পর্কে শেষ করে দিতে পারে। ঝড়ের রাতে তো কতো গাছ ভেঙ্গে পারে তাই বলে কি বাগান শুণ্য থাকে। সেখানে তো নতুন করে আবার সৃষ্টি হয় গাছের, বাগানের। তেমনি করে সব ভুলে গিয়ে কি আবার এক হতে পারিনা আমরা।

তোমাকে এতো কথা বলেই বা লাভ কি? তুমি তো মনে করো তোমার অবহেলায় হয়তো আমি অন্য কোথাও যত্ন পাবার স্বপ্নে বিভোর,,,,,,

(৩)

হঠাৎ করেই কলম থেমে গেল সাথীর। আসলেই কি সে অন্য কারো যত্নের স্বপ্নে বিভোর? এমন ভাবনায় মনে পরলো শাওনের কথা।

শাওনের সাথে সাথীর পরিচয় কোন একটা স্বনামধন্য এনজিওতে ভাইভা দেয়ার সূত্রে। সাথীকে দেখে শাওন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো অনেক সময়। কি ভাবছিলো শাওন তখন এটা মনে করতেই সাথী চোখ স্পর্শ করে। আসলেই কি সাথীর চোখ এতো সুন্দর। শাওন বড় কর্মকর্তা। কাজের কতো ব্যস্ততা। সাথে স্ত্রী, সন্তানের দেখাশোনা কতো কি করতে হয় তাকে। এরমধ্যেও সাথীকে নিয়মিত ফোন করে। নানান ধরনের খোঁজ খবর নেয়। প্রথম যেদিন ফোন কলে কথা হয় সেই স্মৃতি মনে করে সাথী কেমন যেন আনমনে হয়ে গেলো। ফোন করে কি সুন্দর করে সাথীর চোখের, চুলের প্রশংসায় বিভোর করে দিলো। জীবনানন্দে কবিতা কোট করে শাওন বলতেছিলো, 'চুল তার কবে কার অন্ধকার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য। ' 'পাখির বাসার মতো দু'টি চোখ তোমার, ঠিক যেন নাটরের বনলতা সেন।' 

সাথীর খুব হাসি পায়। শাওনকে বলে আপনার কি হয়েছে? আমাকে ইমপ্রেস করতে কি সব আবোলতাবোল বকছেন। সাথীর হাসি থামিয়ে দিয়ে শাওন বললো আবোলতাবোল নয়, আমি তোমার চাহনির মায়ায় পরেছি। তোমার মায়ায় ভরা চোখ, গোলাপফোটা ঠোঁটের হাসি আমায় মুগ্ধ করেছে। আমি তোমাতে হারিয়ে যাচ্ছি।

কথাগুলো ভালো লাগে সাথীর। সাথী মনে মনে ভাবতে থাকে কতো সুন্দর করে কথা বলছে শাওন। একজন মানুষ এতো সুন্দর করে মানুষকে হাসাতে পারে, খুশি করতে পারে তা শাওনের সাথে কথা না হলে জানা হতো না সাথীর। তাই নিয়মিত কথা হতে থাকে দু'জনের। কখনো কাজের ফাঁকে, কখনো রাতের আধাঁরে নিঝুম নিস্তব্ধ ক্ষণে সারারাত্রি কথা হতে থাকে। দু'জনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা, মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা চাপা বেদনারা বের হতে থাকে শাওন সাথীর ফোনালাপ জুড়ে। ভালোবেসে ফেলে হয়ত দু'জন দু'জনকে কিন্তু কেউ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। সময়ের বাস্তবতায় সব কথা বলা যায় না। অনেক কথা বুকের মাঝেই চাপা রাখতে হয়, নিজের ভালো থাকার জন্য কিংবা অন্যকে ভালো রাখার জন্য।

সাথী আবার ফিরে যায় কলেজের সেই সুখময় স্মৃতিতে। সবুজ সাথী কি সুন্দর নামের মিল। বিধাতা মনে হয় এক সাথে থাকার জন্যই সৃষ্টি করেছে। কিন্তু একসাথে থাকা হয়নি বেশি দিন। কিন্তু সজলকে তো সারা জীবনের জন্য চাই। সারাজীবনের সঙ্গী হিসাবেই তো সজল আমার জীবনে আসল বিয়ে করে। তবু কেন একসাথে থাকতে পারছিনা। একটা সুখের সংসার হচ্ছে না। আমি তো চাই সজলকে নিয়েই বাকি জীবনটা পারি দিতে। সাথী এমন সব ভাবতে ভাবতেই নীল খামের দিকে তাকিয়ে লিখতে শুরু করে তার বেদনার নীল কথা।

প্রিয় শাওন,

অনেক দিন থেকেই ভাবছি একটা কথা বলবো কিন্তু কখনো বলা হয়নি। বলতে পারো সাহস হয়নি। হয়তো কখনো বলাও হবে না যে, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার ভালো লাগায়, মন্দ লাগায়, তোমার যত্নে, ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। নিজের অজান্তে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। জানি তুমিও আমাকে ভালোবাসো কিন্তু তোমার বাস্তববাদী চিন্তার জগতে শত যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বেঁচে থাকলেও সংসার রেখে অন্য মেয়ের জীবনে আসতে চাইবেনা। তুমি আমার জীবনে আসো তা আমিও চাইনা। কারন আমিও চাই আমার সজলের সাথেই জীবন পার করি। কিন্তু তার অবহেলা আমায় কষ্ট দেয়। আমায় হৃদয়কে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। আমি কি করব বুঝতে পারিনা।

শাওন, তোমার কেয়ারিং, তোমার রোমান্টিকতা আমায় টানে কিন্তু তোমার কাছে যাবো সেই সুযোগও তুমি রাখনি। তুমি এমনই এক সময় আমার জীবনে এসেছো যখন না পারো আমায় গ্রহণ করতে, না পারি আমি তোমার জীবনে যেতে। কেমন এক শাঁখেরকরাতে ফেলে দিলে আমায়। আমি আজ অসহায়। আমার জীবনে কোন সুখ স্থায়ী হতে চায় না। জানিনা আমার জীবনে কি হবে। আজ সব ছেড়ে দিয়েছি বিধাতার হাতে। দেখি তিনি আমায় কি জন্য কি রেখেছেন শেষ পর্যন্ত।

আচ্ছা এতো কথা কেন তোমাকে বলছি। তোমাকে নিয়ে কেন এতো স্বপ্ন দেখি। তুমি তো আমার হবে না বলেই দিয়েছো, আমিও যে বলিনি তা নয়। আমরা তো দু'জনেই চাইনা দু'জনের হতে তবু কেন ভালোবাসি, কেন কাছে আসার স্বপ্নে বিভোর। দিনেরাতে, ক্ষণে ক্ষণে তোমায় ভাবি। জানিনা কেন এমন হলো আমার। দিন কাটে তো রাত কাটেনা, রাত কাটে তো ভোরের সূর্য দেখিনা। এমন কেন হলো বলতে পারো শাওন,,,,,,

সাথী আর ভাবতে পারছে না। কেন লিখছে এই চিঠিগুলো। কারও কাছে তো পাঠানো হবে না কোন একটা চিঠি। তবুও কেন এতো কথা লিখে রাখা। বেদনার নীল আকাশে নীল রঙের কালিতে লেখা চিঠি নীল খামের ভিতর লুকিয়ে কেঁদে যাবে চিরদিন। কারো মনের আকাশে একবিন্দু জায়গা হবে না এই কথাগুলোর।  এমন ভাবতে ভাবতে চোখের দু'ফোটা জল গড়িয়ে পরলো হাতের কলমে আর মনে বেজে উঠলো সেই সুর, 'না, না কিচ্ছু চাইনি আমি আজীবন ভালোবাসা ছাড়া, আমিও তাদেরই দলে বারবার মরে যায় যারা'।

নীল খামে বেদনার চিঠি 

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন

Thursday, February 2, 2023

মনের প্রতিচ্ছবি -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

কি স্বচ্ছ এই দীঘির জল

মানুষের মনটাও যদি এমন হতো

যে মনের দিকে তাকালে

তার ভেতর বাহির সব দেখা যেত।

কত স্বচ্ছ, কত নির্মল এই জল

এ জলের আয়নায় ভেসে উঠে

নিজের প্রতিচ্ছবি, অন্যের প্রতিচ্ছবি

শুধু ভেসে উঠেনা কারো মনের প্রতিচ্ছবি।

 

------------------------
22/01/2017

আমি কবি হতে চাই -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

বহু দিনের শখ ছিল
একদিন আমি কবি হবো
তোমাকে আমার কবিতা বানাবো।
বহু দিনের শখ আমার
আমি কবি হবো
তুমি আমার কবিতা হবে।
আজো আমার শখ আছে
আমি কবি হবো
কিন্তু তোমাকে কি করে বানাবো কবিতা।
আমার যে কবিতা বানানোর ছন্দ নাই
আমার যে কবিতা লেখার ভাষা নাই
আমার যে সাহিত্য জ্ঞান নাই।
নাই, নাই, নাই
আমার কোন কিছুই নাই
আমার আমি বলতে কিছুই নাই।
কি করে তোমায় কবিতা বানাই
কি করে তোমায় ছন্দ দেই
কি করে তোমায় সাহিত্য রসে ডোবাই।
এতো কিছু নাই-এর মাঝেও
তোমাকেই আমার কবিতা বানাতে চাই
তোমাকে আমি আমার মতো করে সাজাতে চাই।
জানি আমার চাওয়া পূর্ণতার জন্য
আমাকে ছন্দ শিখতে হবে
আমাকে ভাষা জ্ঞান ঠিক করতে হবে
আমাকে সব সাহিত্য রসে ভেজাতে হবে।
জানি না আমি তা পারব কি-না
তবুও আমার শখটা পূর্ণ করতে চাই।
আমি চাই, সত্যি আমি চাই
তুমি, তুমিই আমার কবিতা হবে।
আমি আমার মনের মাধুরী দিয়ে
সেই কবিতায় ছন্দ দিব
ভাষা জ্ঞান যাই থাকুক না কেন
তোমায় নিয়েই সাহিত্য রসের সৃষ্টি করবো।
তুমি শুধু আমার পাশে থাকো
আমাকে তৈরি করতে সাহায্য করো
আমি কথা দিচ্ছি, হ্যাঁ আমি কথা দিচ্ছি
আমার বহু দিনের শখটা পূর্ণ করবো।
শুধু তুমি একটি বার আমার কবিতা হও
শুধু একটু ধৈর্য ধরো, শুধু একটু সময় দাও।
আমি তো আর রাতারাতি সব পারবো না
আমাকে একটু সময় দাও
আমি কবিতায় ছন্দ আনবো
ভাষা জ্ঞান বাড়িয়ে তুলবো
সাহিত্য রসের সৃষ্টি করবো।
আমি কবি হতে চাই
তোমাকে কবিতা বানাতে চাই।
আমার বহু দিনের শখ
আমি পূর্ণ করতে চাই
আমি কবি হতে চাই।।

 

 

আমি কবি হতে চাই 

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন

The Role of NGO's For Rural Development of Bangladesh -- Md. Helal Uddin

The Role of NGO's For Rural Development of Bangladesh

 

Bangladesh has been perhaps the most important hearth on the globe for NGOs (non-government organization). Some estimates place the number of NGOs in Bangladesh in excess of 20,000. there are many types of NGOs in the country, but most focus on development or poverty alleviation. Bangladesh is the birth place of the micro credit NGO, namely Grameen Bank, Asa, Brac etc work in world wide. Grameen Bank with Dr. Muhammad Yunus jointly awarded the Nobel Peace prize in 2007.

 

HISTORY OF NGOs

International Red Cross and Red Crescent Movement is the world largest group of humanitarian NGOs. Though voluntary associations of citizens have existed through history, NGOs along the lines seen today. One of the first such organizations, the International Committee of the Red Cross, was founded in 1863. The phrase ‘Non-Government Organization’ came into use with the establishment of the United Nations in 1945 with provisions in article 71 of the United Nations charter. In Bangladesh NGOs activities began in the seventies following the aftermath of 1970 tidal cyclone and 1971 independence war. Globalization during the 20th century gave rise to the importance of NGOs.

 

TYPES OF NGOs

NGOs are an heterogeneous group. A long list of acronyms has development around the term NGO. These include:

  • INGO- stands for international NGO, such as CARE, Helvetas, ADFA-India.
  • BINGO- is short for Business-Oriented International NGO.
  • RINGO- is an abbreviation of Religious International NGO such as Catholic Relief.
  • ENGO- short for Environmental NGO, such as Global 2000.
  • GONGOs- are Government Operated NGOs, which may have been set up by government to look like NGOs in order to qualify for outside aid or promote the interests of the government is question.

 

PURPOSES OF NGOs

NGOs exist for a variety of purpose, usually to further the political or social goals of their members. Examples include improving the state of the natural environment, encouraging the observance of human rights, improving the welfare of the disadvantaged or representing a corporate agenda. However, there are a huge number of such organizations and their goals cover a broad range of political and philosophical positions.

 

THE ROLE OF NGOs FOR RURAL DEVELOPMENT

NGOs play an important role for rural development of Bangladesh it is doubtless to say that NGOs with their constructive efforts have been promoting development strategies by creating unique changes in the field of economic progress in Bangladesh since her independence.

Poverty Alleviation:

Poverty alleviation is the supreme target of the NGO among various activities. There are different NGOs acting in our country patronized locally and internationally. NGO plays an important role in promoting the capabilities of the people having in the poverty.

Education Programme:

Though primary education is compulsory programme of the government. Students of the rural areas are not regular and careful about that. NGO has taken long planning to provide primary education suitable for the children living in the villages. In the field of education NGO primary schools with around two million students account for approximately 10 percent of currently enrolled students. Of these BRAC alone accounts for over 1.5 million students in 31,000 schools, 66 percent of whom are girls from poor families.

Standard of Living:

For the standards of the living of the people the NGOs have taken lots of programmes. The officer of the NGOs go to the rural and remot ares of the country and by their physical visit and communication they make the people understand the benefits of building sound health. The villagers don’t have minimum idea of regarding the nutrition of food and first aid. So, NGOs provide them a little bit of idea of medical science by which they can learn how to give the first aid.

Development of Agriculture:

NGOs play an important role in the development of agriculture in our country. In order to development of agriculture they provide different kinds of tools, material, fertilizer, seed and loan on simple interest. Sometimes they give interest free loan. In  this way NGOs play an important role in the development of agriculture.

Health Care:

NGO community based health care has made heath care more accessible, effected malnutrition and child survival. It also lead to higher use of family planning.

Gender Equity:

Bangladesh is the only country in South Asia to have achieved gender equity in primary enrollment, in large part due to the role played by NGOs.

Supply Information and data:

Effective plan and programming of our national instruction require reliable data and information which collection then through their personal observation and friendship. Most of the NGOs in Bangladesh have practical experience of organizing people to achieve their predetermined objectives.

Raising Fund:

NGO plays an important role in raising fund of the country from different sources including small donation from the potential individuals. They also know where to allocate the funds for the purpose.

Social Economic Development:

NGOs touch the fundamental elements of socio-economic development of the country. If human resources are not properly used it will be gradually inactive and useless for the country bringing no utility. So NGOs with their pragmatic and practical programmers are always acting to bring fruitful after math of the said resources.

Uplifting programme:

NGOs are active in our grass-root levels with their relief, poverty alleviation, social uplift, environmental and overall development programs. The rural poor have now direct access to the aid, credit and support to the NGOs. They are participating actively in the activities to improve their lat. In many cases the NGOs are working as the awareness builders.

 

Communication Facilities:

NGOs not only their own sake but also for the local and national interest they build many roads, bridges and highways to provide communication facilities. Considering to uplift the standard of the lives of the people the NGOs have taken lots of developing programs. They go to the rural and remotest area of the country. They try to make the people understand the benefit of building sound health.

NGO plays a very important role in the developing country like Bangladesh specially rural development. In all spheres of development NGOs are reported to have created a land mark in the history of Bangladesh.

 

The Role of NGO's For Rural Development of Bangladesh 

-- Md. Helal Uddin

ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু -- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

 

wØZxq wek^ hy‡×i ci c„w_exi Dcwb‡ewkK kw³¸‡jv msK‡U ci‡j c„w_ex‡Z bZzb bZzb RvwZivóª m„wó nq| G mKj RvwZiv‡óªi wfwË wQj RvZxqZvev`| RvZxqZvev‡`i Dcv`vb¸wj nj fvlv, ag©, Mv‡qi is, †fŠ‡MvwjK HK¨, ms¯‹…wZ BZ¨vw`| 1952 mv‡ji gnvb fvlv Av‡›`vjb RvwZ, ag©, eY© wbwe©†k‡l mKj evOvwj‡K GKwÎZ K‡iwQj  hv evOvwj RvZxqZv ev‡`i wfwË iPbv K‡i| GB evOvwj RvZxqZvev‡`i Dci wfwË K‡iB 1971 mv‡ji gnvb gyw³hy‡×i gva¨‡g evsjv‡`k ¯^vaxbZv jvf K‡i|

RvwZi wcZv e½eÜz †kL gywReyi ingvb wQ‡jb evsjv‡`‡ki BwZnv‡m GK Awemsevw`Z †bZv| evsjv‡`‡ki cÖwZwU gvby‡li ü`‡q e½eÜz wPiw`b Agi n‡q _vK‡eb| fvlv Av‡›`vjb †_‡K ïiæ K‡i 1971 mv‡ji gnvb gyw³hy× cÖwZwU MYZvwš¿K Av‡›`vj‡b RvwZi wcZv e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi Ae`vb Acwimxg| we‡kl K‡i fvlv Av‡›`vj‡b RvwZi wcZv e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi we‡kl Ae`vb i‡q‡Q| AvRxeb evsjv fvlv †cÖgx GB gnvb †bZv 1947 mv‡j fvlv Av‡›`vj‡bi ïiæ †_‡K 1952 mv‡ji P~ovšÍ ce© ch©šÍ Ges ¯^vaxb evsjv‡`k cÖwZwôZ nIqvi ci I evsjv fvlvi Dbœq‡b wb‡R‡K AvZ¥wb‡qvM K‡ib| A`¨vewa fvlv-Av‡›`vj‡b e½eÜzi Ae`vb wb‡q A‡bK cÖeÜ, wbeÜ I eBcÎ cÖKvwkZ n‡j I A‡bK Z_¨ ev` †`qv n‡q‡Q| Avevi A‡bK †ÿ‡Î e½eÜzi Ae`vb‡K Lv‡Uv K‡i †`Lv‡bv n‡q‡Q| Gme w`K we‡ePbv K‡i Av‡jvP¨ cÖe‡Ü mswÿß AvKv‡i fvlv Av‡›`vj‡b e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi Ae`vb Av‡jvPbv Kiv nj|

1947 mv‡ji 14 AvMó cvwK¯Ívb iv‡óªi m„wói ci cÖ_g weZK© ïiæ nq fvlv wb‡q| cvwK¯Ívwb kvmK†Mvôx D`y©‡K cvwK¯Ív‡bi ivóªfvlv wn‡m‡e Pvwc‡q †`Iqvi †Póv K‡i| G wb‡q ZrKvjxb c~e© cvwK¯Ív‡b (eZ©gvb evsjv‡`k) ïiæ nq cÖej MYAm‡šÍvl| ïiæ nq fvlv wfwËK GK e¨vcK MYAv‡›`vjb| GB Av‡›`vj‡bi BwZnvm ch©v‡jvPbv Ki‡j †`Lv hvq †h, e½eÜz †kL gywReyi ingvb GB Av‡›`vj‡bi mv‡_ IZ†cÖvZfv‡e RwoZ wQ‡jb|

1947 mv‡ji 6 I 7 †m‡Þ¤^i XvKvq AbywôZ c~e© cvwK¯Ív‡bi Kgx©m‡¤§vj‡b MYZvwš¿K hyejxM MwVZ nq| D³ m‡¤§j‡b fvlv welqK wKQz cÖ¯Íve M„nxZ nq| G cÖm‡½ MvRxDj nK e‡jb, Ôm‡¤§j‡bi KwgwU‡Z M„nxZ cÖ¯Íve¸‡jv cvV K‡ib †m w`‡bi QvÎ †bZv †kL gywReyi ingvb|Òfvlv m¤úwK©Z cÖ¯Íve DÌvcb K‡i wZwb ej‡jbÓ c~e© cvwK¯Ívb Kg©x m‡¤§jb cÖ¯Íve Kwi‡Z‡Q †h evsjv fvlv‡K c~e© cvwK¯Ív‡bi wjLvi evnb I AvBb Av`vj‡Zi fvlv Kiv nDK| mgMÖ cvwK¯Ív‡bi ivóªfvlv wK nB‡e Zv m¤ú‡K© Avjvc-Av‡jvPbv I wm×všÍ MÖn‡bi fvi Rb mvavi‡bi Dci Qvwoqv †`Iqv nDK| Ges RbM‡bi wm×všÍB P~ovšÍ ewjqv M„nxZ nDKÓ| Gfv‡eB fvlvi `vwe cÖ_‡g D”PvwiZ n‡qwQj| (m~Î t fvlv Av‡›`vj‡b e½eÜzi f~wgKv, fvlv Av‡›`vjb I e½eÜz, e½eÜz M‡elYv †K›`ª, †de&iæqvwi 1994)|

fvlv Av‡›`vj‡bi ïiæ‡Z ÒZgÏyb gRwj‡miÓ ivóªfvlv msµvšÍ Kvh©µ‡g e½eÜz †kL gywReyi ingvb AskMÖnb K‡ib| e½eÜzi cÖ_g Rxebx Kvi Aa¨vcK W. ghnviæj Bmjvg G cÖm‡½ e‡jb, Ô‡kL gywReyi ingvb GB gRwjm‡K ivóªfvlv msµvšÍ eûKvR mvnvh¨ I mg_©b K‡ib| (m~Î t e½eÜz †kL gywRe, K…Z-ghnviæj Bmjvg XvKv, AvMvgx cÖKvkbx 1993 : c„. 104)

1947 mv‡ji wW‡m¤^i gv‡m ivRbxwZwe`mn 14 Rb fvlv weÁvbx 21 `dv `vwe msewjZ fvlv Av‡›`vjb mn Ab¨vb¨ `vwe wb‡q GKwU B‡¯Ínvi cÖYqb K‡iwQ‡jb| GB `vwe ¸wji g‡a¨ wØZxq `vwewU wQj ivóªfvlv m¤úwK©Z| GB HwZnvwmK B‡¯ÍnviwU GKwU †QvU cyw¯ÍKv AvKv‡i cÖKvwkZ n‡qwQj hv fvlv Av‡›`vj‡bi BwZnv‡m GK Abb¨ `wjj| GB B‡¯Ínvi cÖYq‡b e½eÜzi Ae`vb wQj Ab¯^xKvh© Ges wZwb wQ‡jb Ab¨Zg ¯^vÿi `vZv| G cÖm‡½ XvKv wek^we`¨vj‡qi BwZnvm wefv‡Mi Aa¨vcK W. ˆmq` Av‡bvqvi †nv‡mb e‡jb, ÔcvwK¯Ívb m„wói wZb-Pvi gv‡mi g‡a¨B cyw¯ÍKvwUi cÖKvkbv I cÖPvi ZrKvjxb c~e© cvwK¯Ív‡bi Awaevmx‡`i Rb¨ cvwK¯Ívb bv‡gi ¯^cœ m¤ú„³ †gvnf‡½i m~Pbvi cÖgvb enb K‡i| cyw¯ÍKvwU hv‡`i bv‡g cÖPvwiZ n‡qwQj Zviv mevB AZx‡Z wQ‡jb cvwK¯Ívb Av‡›`vj‡b m¤ú„³ wb‡ew`Z cÖvYKgx©|

D‡jøL¨, G†`iB GKRb wQ‡jb dwi`cy‡ii (eZ©gv‡b †MvcvjMÄ) †kL gywReyi ingvb; cieZx©Kv‡j whwb e½eÜz wnmv‡e evsj‡`k m„wó‡Z †bZ…Z¡ w`‡qwQ‡jb| (m~Î t ivóªfvlv-21 `dv B‡¯Ínvi HwZnvwmK `wjj, kvqLyj evix, cybtcÖKvk Rvbyqvwi 2002)

2gvP© XvKv wek^we`¨vj†q Ôme©`jxq ivóªfvlv msMÖvg cwil`Õ cyb©MwVZ nq| 11 gvP© Ôevsjv fvlv `vwe w`emÕ cvj‡bi †NvlYv †`Iqv nq| H w`b mvaviY ag©NU cvwjZ nq| 1948 mv‡ji 4 Rvbyqvix cÖwZwôZ c~e© cvwK¯Ívb gymwjg QvÎjxM G Kg©m~wP cvj‡b wewkó f~wgKv cvjb K‡ib| wc‡KwUs Kiv Ae¯’vq †kL gywRe, kvgmyj nK, Awj Avnv`mn 69 Rb‡K †MÖdZvi Ki‡j XvKvq 13-15 gvP© ag©NvU cvwjZ nq|

1948 mv‡ji 11 gvP© fvlv Av‡›`vj‡bi BwZnv‡m GK Abb¨ w`b| GB w`‡b ivóªfvlv evsjvi `vwe‡Z mvavib ag©NU I mdj niZvj cvwjZ nq| GB niZv‡j †kL mv‡ne †bZ…Z¡ cÖ`vb K‡ib Ges cywjwk wbh©vZ‡bi wkKvi n‡q †MÖdZvi nb| fvlv ˆmwbK Awj Avnv` Zuvi ÔRvZxq ivRbxwZ 1945 †_‡K 1975Õ MÖ‡š’ wj‡L‡Qb, ÔAv‡›`vj‡b AskMÖnY Kivi wbwg‡Ë †kL gywReyi ingvb †MvcvjMÄ n‡Z 10 gvP© XvKvq Av‡mb| 11 gv‡P©i niZvj Kg©m~wP‡Z hyeK †kL gywRe GZUvB DrmvwnZ n‡qwQ‡jb †h, niZvj Kg©m~wP Zvi Rxe‡bi MwZaviv bZzb fv‡e cÖevwnZ K‡i|

11 gv‡P©i †MÖdZvi e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi ivR‰bwZK Rxe‡bi GK Uvwbs c‡q›U|  ivóªfvlv Av‡›`vj‡bi BwZnv‡mHwZnvwmK 11 gv‡P©i ¸iæZ¡ Ges †MÖßvi cÖm‡½ e½eÜz e‡jb, Ôivóªfvlv Av‡›`vjb 1952 mv‡ji 21 †de&iæqvwi bq, g~jZ ïiæ n‡qwQj 1948 mv‡ji 11 gvP©| (m~Î t ˆ`wbK AvRv`, 16 †de&iæqvwi, 1971)

c~e© cvwK¯Ívb AvIqvgx gymwjg jx‡Mi mvaviY m¤cv`K kvgmyj nK 25 †deªæqvix 1952 GKwU wee„wË cÖ`vb K‡ib| GB wee„wË †Z wZwb e‡jb †h, ÒXvKv wek^we`¨vj‡qi QvÎ-QvÎxiv evsjv‡K cvwK¯Ív‡bi GKwU Ab¨Zg ivóªfvlv Kivi `vwe‡Z fvlv Av‡›`vjb ïiæ K‡i| GUv cwiPvwjZ n‡qwQj Central State Language Committee of Action KZ…©K| Avwg wb‡RB GUvi m`m¨ wQjvg| Avwg ¯§iY Ki‡Z cvwi †h, †kL gywReyi ingvb, bBgyÏxb Avng`, KvgiæwÏb Avn‡g`, A¨vW‡fv‡KU Awj Avnv`, †gvn¤§` †Zvqvnv, cÖ‡dmi Aveyj Kv‡mg cÖg~L e¨w³eM© GB KwgwUi m`m¨ wQ‡jb|

Avgv‡`i Awdm wQj dRjyj nK gymwjg nj| (Source: Secret Document Of  Intelligence Branch on Father Of  The Nation Bangladesh Bangabandhu  Sheikh Mujibur Rahman Vol-2, 1951-1952, P-143)

1952 mv‡ji fvlv Av‡›`vjb PjvKv‡j †kL gywReyi ingvb †R‡j e›`x wQ‡jb| †R‡j AšÍixY †_‡K I wZwb fvlv Av‡›`vj‡b †bZ…Z¡ †`b|

1949 mv‡ji wW‡m¤^i gv‡m e½eÜz †kL gywReyi ingvb Rb wbivcËv AvB‡b †MÖdZvi nb| e½eÜz‡K XvKv †K›`ªxq KvivMv‡i cvVv‡bv nq| (Z_¨) m~Î t Amgvß AvZ¥Rxebx : c„ôv-168)

ivRe›`x wn‡m‡e XvKv †gwW‡Kj K‡jR nvmcvZv‡j wPwKrmviZ Ae¯’vq 1952 mv‡ji fvlv Av‡›`vj‡bi P~ovšÍ c‡e© †gvnv¤§` †Zvqvnv I Awj Avnv` e½eÜzi mv‡_ †`Lv Ki‡Z Av‡mb| e½eÜzi G mgq Lv‡jK †bIqvR, †Mvjvg gvneye Avi I K‡qKRb QvÎjxM †bZv‡K Lei w`‡Z e‡jb| eviv›`vq e‡m AvjvcKv‡j wZwb e‡jb,Òme© `jxq msMÖvg cwil`MVb Ki‡Z| (Drm t Amgvß AvZ¥Rxebx, c„ôv t 196)

Avevi lohš¿ Pj‡Q evsjv fvlvi `vwe‡K bm¨vr Kivi| GLb cÖwZev` bv Ki‡j †K›`xq AvBb mfvq evsjvi cwie‡Z© D`y©i c‡ÿ cÖ¯Íve cvm K‡i †`‡e| wZwb I mne›`x Qv·bZv gnxDÏxb Avn‡g` AvgiY Abkb ïiæ K‡ib hv fvlv Av‡›`vjb‡K cÖevwnZ K‡i| cÖvq 27 gvm ci 27 †deªæqvix, 1952 e½eÜz †kL gywReyi ingvb gyw³ jvf K‡ib| (Amgvß AvZ¥Rxebx, c„ôv t 197)

24 †deªæqvixi ci fvlv Av‡›`vjb XvKvq w¯ÍwgZ n‡q co‡j I †Rjvq, gnKzgvq I MÖvg‡j Zv Qwo‡q c‡o, G m¼U Kv‡j fvlv Av‡›`vjb Pvwj‡q hvIqvi Rb¨ †kL gywR‡ei D‡`¨v‡M ivóªfvlv msMÖvg cwil` c~YMV©b Kiv nq| 1952 mv‡ji 27 GwcÖj XvKv evi jvB‡eªwi n‡j fvlv Av‡›`vjb Kvix 500 fvlv ˆmwb‡Ki mgv‡ek AbywôZ n‡j †kL gywReyi ingvb fvlY †`b| (wmivR DÏxb Avn‡g`, ¯^vaxb evsjv †`‡ki Afz¨`‡qi BwZnvm| c„ôv t 136-137)

RvwZi wcZv e½eÜz †kL gywReyi ingvb Avg„Zy¨ evsjv fvlvi Dbœq‡b Ges me© ¯Í‡i evsjv fvlv cÖPj‡bi Rb¨ KvR K‡i †M‡Qb| GiB avivevwnKZvq wZwb 1974 mv‡ji 25 †m‡Þ¤^i RvwZ ms‡N evsjvq fvlY cÖ`vb K‡ib hv evsjv fvlv‡K AvšÍRvwZ©K A½‡b cwiwPwZ Av‡iv I evwo‡q †`q|

1971 mv‡ji 15 †deªæqvix ZrKvjxb AvIqvgx jxM mfvcwZ †kL gywReyi ingvb evsjv GKv‡Wwg‡Z GKwU mfvq e‡jb| Òfvlv Av‡›`vj‡bi knx`‡`i cÖwZ kÖ×v Ávcb K‡i Avwg †Nvlbv KiwQ| Avgvi `j ÿgZv MÖn‡Yi w`b †_‡KB mKj miKvwi Awdm Av`vj‡Z I RvZxq Rxe‡bi Ab¨vb¨ †ÿ‡Î evsjv Pvjy n‡e|Ó (m~Î t ˆ`wbK cvwK¯Ívb, 16 †deªæqvix, 1971)

1972 mv‡ji msweav‡b wZwb evsjv‡K ivóªfvlv wn‡m‡e MÖnY K‡ib|

evOvwj RvZxqZvev` n‡jv fvlv wfwËK RvZxqZvev`| GB RvZxqZvev‡`i Rb¥ nq 1952 mv‡ji fvlv Av‡›`vj‡bi gva¨‡g| Avi GB fvlv Av‡›`vj‡bi c_ a‡iB &G‡m‡Q Avgv‡`i wcÖq ¯^axbZv| GB gnvb Av‡›`vj‡b e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi Ae`vb wQj Acwimxg| ïay ZvB bq GB gnvb †bZvi Pig AvZœZ¨v‡Mi gva¨‡gB Avgiv c„w_exi gvbwPÎ GKwU ¯^vaxb I mve©‡fŠg †`k wn‡m‡e cwiwPwZ jvf K‡iwQ|



References: 

  •  ‡fv‡ii KvMR, kwbevi, 21 †de&eªæqvwi 2015| 
  • Secret Document Of  Intelligence Branch On Father Of  The Nation Bangabandhu    Sheikh Mujibur Rahman, VOL-2,1951-1952, P-143
  • ‡kL gywReyi ingvb, Amgvß AvZœRxebx, BDwbfvwm©wU †cÖm wjwg‡UW, 2012: 168-197|
  • wmivR D`&`xb Avn‡g`, ¯^vaxb evsjv‡`‡ki Afz¨`‡qi BwZnvm, 2015: 136-137| 

 ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু 

-- মো হেলাল উদ্দিন


 

বাহান্ন নিউজ এ প্রকাশের লিঙ্কঃ   ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু

দৈনিক শিক্ষাবার্তা পত্রিকায় প্রকাশের লিঙ্কঃ   ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু

দৈনিক ভোলার খবর পত্রিকায় প্রকাশের লিঙ্কঃ   ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু

দৈনিক আমাদের বার্তা পত্রিকায় প্রকাশের লিঙ্কঃ   ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু

 

 

 

বঙ্গবন্ধুর ভাষা আন্দোলন -- মোঃ হেলাল উদ্দিন


 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তারসভ্যতার সংকটপ্রবন্ধে লিখেছিলেন, ‘আজও আশা করে আছি পরিত্রাণ কর্তা আসবে সভ্যতার দৈববাণী নিয়ে, চরম আশ্বাসের কথা শোনাবে পূর্ব দিগন্ত থেকেই’ বাঙ্গালী জাতিকে সেই আশ্বাসের কথা শোনাতে এসেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি শুধু বাঙ্গালীর স্বাধীনতাই এনে দেননি। এই স্বাধীনতার ভিত্তি বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের প্রথম আন্দোলন ভাষা আন্দোলনেও তার ছিল অসামান্য অবদান। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী সচেতনভাবে বাঙালির কাছ থেকে ভাষার অধিকার হরণ করতে চেয়েছিল তারা চেয়েছিল সংখ্যালঘু জনগণের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে কিন্তু তাদের সেই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন বাঙালির ত্রাণকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আজীবন মাতৃভাষাপ্রেমী এই মহান নেতা ১৯৪৭ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্বে, ১৯৪৮ সালে রাজপথে আন্দোলন ও কারাবরণ, পরে আইনসভার সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রভাষার সংগ্রাম ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অতুলনীয় ভূমিকা রাখেন স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি বাংলা ভাষাকে তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর কাছে

ভাষা আন্দোলনে তার এই অবদানকে তেমন করে তুলে ধরা হয়নি ইতিহাসে। কিন্তু অসমাপ্ত আত্মজীবনীপ্রকাশের পর ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর বৃহৎ অবদান স্পষ্ট হয় সেখানে বঙ্গবন্ধু নিজেই উল্লেখ করেছেন ভাষা আন্দোলনের ঘটনাক্রম ও তাঁর ভূমিকা ১৯৪৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সংবিধান সভায় ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলা ভাষাকেও রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান কিন্তু কেবল উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করতে চায় মুসলিম লীগ বঙ্গবন্ধুঅসমাপ্ত আত্মজীবনীর ৯১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘আমরা দেখলাম, বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে বাংলাকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও তমুদ্দুন মজলিস এর প্রতিবাদ করল এবং দাবি করল, বাংলা ও উর্দু দুই ভাষাকেই রাষ্ট্রভাষা করতে হবে আমরা সভা করে প্রতিবাদ শুরু করলাম এই সময় পূর্ব পাকিস্তান মুসলীম ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিস যুক্তভাবে সর্বদলীয় সভা আহ্বান করে একটারাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদগঠন করল

 ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক অনন্য অবিস্মরণীয় দিন। এদিন ভাষার দাবিতে প্রথম হরতাল পালিত হয়। এটাই হলো পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। হরতালের নেতৃত্ব দেন শেখ মুজিবুর রহমান। ওইদিন তিনি পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এটি ছিল পাকিস্তানে কোনো প্রথম রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার। (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: জীবন ও রাজনীতি, প্রকাশক বাংলা একাডেমি)

ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ১৯৪৯ সালের অক্টোবরে শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করে পাকিস্তান সরকার। তবে কারাগার থেকেই ওই আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন তিনি। ভাষাসৈনিক গাজীউল হক তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন- ‘১৯৪৯ সালের অক্টোবর মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জনাব শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন জেলে আটক ছিলেন। ফলে স্বাভাবিক কারণেই৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা জনাব শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে জেলে থেকেই তিনি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতেন। ’ (গাজীউল হক, আমার দেখা আমার লেখা, পৃষ্ঠা-৪০)

একই কথা লিখেছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী তার  একুশকে নিয়ে কিছু স্মৃতি, কিছু কথাপ্রবন্ধে। সেখানে তিনি লিখেছেন, শেখ মুজিব ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ ফরিদপুর জেলে যাওয়ার আগে পরে ছাত্রলীগের একাধিক নেতার কাছে চিরকুট পাঠিয়েছেন। ’ (তথ্যসূত্র: ভালোবাসি মাতৃভাষা- পৃষ্ঠা: ৬২)

১৯৫১ সালে যখন খাজা নাজিমুদ্দীন ঘোষণা দেন, ‘উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বঙ্গবন্ধু তখন জেলেঅসমাপ্ত আত্মজীবনীর ১৯৬ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘বারান্দায় বসে আলাপ হল এবং আমি বললাম, সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করতে আওয়ামী নেতাদেরও খরব দিয়েছি...আবার ষড়যন্ত্র চলছে বাংলা ভাষার দাবিকে নস্যাৎ করার এখন প্রতিবাদ না করলে কেন্দ্রীয় আইনসভায় মুসলিম লীগ উর্দুর পক্ষে প্রস্তাব পাস করে নেবে...খবর পেয়েছি আমাকে শীঘ্রই আবার জেলে পাঠিয়ে দিবে, কারণ আমি নাকি হাসপাতালে বসে রাজনীতি করছি

১৯৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘পরের দিন রাতে এক এক করে অনেকেই আসল সেখানেই ঠিক হল আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করা হবে এবং সভা করে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করতে হবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেই রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের কনভেনর করতে হবে ফেব্রুয়ারি থেকেই জনমত সৃষ্টি করা শুরু হবে

বঙ্গবন্ধু জেলে থাকলেও আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের সাথে তার যোগাযোগ হতো নিয়মিত তিনিঅসমাপ্ত আত্মজীবনীর ২০৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘২১শে ফেব্রুয়ারি আমরা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা নিয়ে দিন কাটালাম, রাতে সিপাহিরা ডিউটিতে এসে খবর দিল, ঢাকায় ভীষণ গোলমাল হয়েছে কয়েকজন লোক গুলি খেয়ে মারা গেলে রেডিওর খবর ফরিদপুরে হরতাল হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীরা শোভাযাত্রা করে জেলগেটে এসেছিল তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘বাঙালিদের শোষণ করা চলবে না’, ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’, ‘রাজবন্দীদের মুক্তি চাই’, আরও অনেক স্লোগান

ভাষার মিছিলে গুলিতে শহিদ হওয়া নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘মুসলিম লীগ সরকার কত বড় অপরিণামদর্শিতার কাজ করল মাতৃভাষা আন্দোলনে পৃথিবীতে এই প্রথম বাঙালিরাই রক্ত দিল দুনিয়ার কোথাও ভাষা আন্দোলন করার জন্য গুলি করে হত্যা করা হয় নাই জনাব নূরুল আপনি বুঝতে পারলেন না, আমলাতন্ত্র তাঁকে কোথায় নিয়ে গেল...আমি ভাবলাম, দেখব কি না জানি না, তবে রক্ত যখন আমাদের ছেলেরা দিয়েছে তখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে আর উপায় নাই মানুষের যখন পতন আসে তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ভাষা আন্দোলন নিয়ে বিবৃতি দিলে মুসলিম লীগের পত্রিকায় তা বিকৃতি করে ছাপা হয় বঙ্গবন্ধু ২১২ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘এদিকে মুসলিম লীগের কাগজগুলি শহীদ সাহেবের বিবৃতি এমনভাবে বিকৃত করে ছাপিয়েছে যে মনে হয় তিনিও উর্দুই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হোক এটাই চান আমি সাধারণ সম্পাদক হয়েই একটা প্রেস কনফারেন্স করলাম তাতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে, রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে এবং যাঁরা একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দান এবং যারা অন্যায়ভাবে জুলুম করেছে তাদের শাস্তির দাবি করলাম সরকার যে বলেছেন, বিদেশী কোন রাষ্ট্রের উসকানিতে এই আন্দোলন হয়েছে, তার প্রমাণ চাইলাম

ভাষা আন্দোলনের পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদান, সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু, সংসদের দৈনন্দিন কার্যাবলী বাংলায় চালু প্রসঙ্গে তিনি আইন সভায় গর্জে ওঠেন এবং মহানায়কের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরিতে মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধুসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওইদিনও রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি জানান তিনি।  

১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। এর পেছনেও বিশেষ অবদান রয়েছে বঙ্গবন্ধুর।

১৯৭১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবসে আপনারা এখানে এসেছেন, ১২টা ১ মিনিটের সময় আমি মাজারে গিয়েছি, সেখান থেকে সোজা এখানে চলে এসেছি বাঙালিরা বহু রক্ত দিয়েছে ১৯৫২ সালে যে রক্ত দেয়া শুরু হয়েছে সে রক্ত আজো শেষ হয় নাই, কবে হবে তা জানি না আজ শহিদ দিবসে শপথ নিতে হবে, যে পর্যন্ত না ৭ কোটি মানুষ তার অধিকার আদায় করতে না পারবে সে পর্যন্ত বাংলার মা-বোনেরা বাংলার ভাইয়েরা আর শহিদ হবে না, গাজী হবে

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন দেশের মর্যাদা লাভ করে। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলা ভাষায় সংবিধান প্রণীত করেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রথম বাংলায় বক্তব্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাকে তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু মনে করতেন, মাতৃভাষার প্রতি যার ভালোবাসা নেই দেশের প্রতি তার ভালোবাসা থাকবে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তাই ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান সরকারি কাজে বাংলাভাষা প্রচলনের প্রথম সরকারি নির্দেশ জারি করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ভাষা-আন্দোলনেরই সুদুর প্রসারী ফলশ্রুতি। ’ (দৈনিক সংবাদ, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫)

বাংলা ভাষা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারাবিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। যার পিছনে ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্য অবদান। তাই কবিতার ভাষায় বলতে পারি, একুশ মানে মাথা নত না করা; একুশ মানে দৃপ্ত পথে এগিয়ে যাওয়া একুশের পথ ধরেই এসেছে বাংলার স্বাধীনতা, একুশের চেতনায় এগিয়ে চলেছি আমরা।

Sheikh Mujibur Rahman - Wikipedia 

বঙ্গবন্ধুর ভাষা আন্দোলন  

-- মোঃ হেলাল উদ্দিন

 

পত্রিকায় প্রকাশিত লিঙ্কঃ

বঙ্গবন্ধুর ভাষা আন্দোলন