Sunday, March 30, 2025
ঈদ মাসের বেতন বোনাস এবং গার্মেন্টস মালিক -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
মালিকানা বৃদ্ধি পাবে তাই তো মালিক টাকা বিনিয়োগ করে এ কথা সত্য, তবে মনে রাখতে হবে বিনিয়োগের টাকার সাথে শ্রমিক তার শ্রম বিনিয়োগ করে তাই মুনাফার অংশ তাদেরও প্রাপ্য। মুনাফার অংশ না দিক শ্রমের বিনিময় মূল্য তো সঠিকভাবে সঠিক সময়ে দিয়ে দিবে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ভাতা সঠিক সময়ে দিতে সমস্যা কোথায়? অন্যান্য সময় এ নিয়ে তেমন কোন কথা না শুনলেও প্রতি ঈদের সময় এই সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করে। কিন্তু কেন?
প্রতি ঈদের সময়ই শ্রমিকদের বেতন দেয়া, বোনাস দেয়া নিয়ে প্রকট সমস্যা দেখা দেয়। যেটাকে আমার কাছে মনে হয় অনেকটা ইচ্ছাকৃত। কেননা বছরের দুই ঈদ বাদে তো এমন সমস্যার খবর দেখতে পাইনা। তাহলে কি মালিকপক্ষ এটা ইচ্ছাকৃত করেন? আমার কাছে তো তাই মনে হয়। আমার ধারণা সরকার থেকে বিশেষ প্রণোদনা কিন্তু অন্য কোন উপায়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য এমন নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। কেননা, প্রতি বছরই দেখা যায় গার্মেন্টস মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন ভাতা দিতে পারবে না কিংবা আংশিক দিবে বলে তারা ঠিকই আনন্দ ভ্রমণে, ওমরাহ্ পালন করতে কিংবা ঈদ শপিং করতে বিদেশ চলে যায়। তাদের এই টাকা আসে কোথা থেকে? কেউ কি জানতে চেয়েছেন।
যাইহোক, সামনে আসছে ঈদ। এই ঈদেও শ্রমিকদের চোখের জল দেখতে হচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়। আশাকরি সরকার এই বিষয়ে কঠোর হবেন এবং ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন বোনাস পাবার ব্যবস্থা করে সাধারণ শ্রমিকের মুখে হাসি ফুটাবেন।
Tuesday, March 25, 2025
মাধবীলতা ০৬ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
হতাম যদি আমি -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
বৈশাখী মেঘ -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
Monday, March 24, 2025
হুমায়ুন আজাদের নারী, নারীবাদের এক দলিল -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
Sunday, March 23, 2025
রমাযানের শেষ দশকের আমলঃ লাইলাতুল কদর -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘নিশ্চয়ই আমি নাযিল করেছি এ কুরআন মহিমান্বিত রাত্রিতে। আর আপনি কি জানেন মহিমান্বিত রাত্রি কী? মহিমান্বিত রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। সেই রাত্রে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ এবং রূহ তাদের প্রতিপালকের আদেশক্রমে অবতীর্ণ হয়। সেই রাত্রি শান্তিই শান্তি, ফজর হওয়া পর্যন্ত।’’ (আল-কদরঃ ১-৫)
এখানে মহিমান্বিত রাত্রি বলতে লাইলাতুল কদরের কথা বলা হয়েছে, যা পবিত্র রমাযানের শেষ দশক তথা নাজাতের দশ রাতের কোন এক রাত্রিতে রয়েছে। তাই রমাযানের শেষ দশকের আমলে একটা অন্যতম আমল হলো লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে বেশি বেশি ইবাদাত করা। লাইলাতুল কদরের রাত্রি রমযানের কোন তারিখে এবং এই রাত্রিতে ইবাদাতের ফযিলত কি এই সম্পর্কে সহহী বুখারী শরীফের কতিপয় হাদিস নিয়ে আলোচনা করা হলো।
উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে লাইলাতুল কদরের (নির্দিষ্ট তারিখ) অবহিত করার জন্য বের হয়েছিলেন। তখন দু’জন মুসলিম ঝগড়া করছিল। তা দেখে তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদরের সংবাদ দিবার জন্য বের হয়েছিলাম, তখন অমুক অমুক ঝগড়া করছিল, ফলে তার (নির্দিষ্ট তারিখের) পরিচয় হারিয়ে যায়। সম্ভবতঃ এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তা তালাশ কর। (৪৯) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৯৩)
‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রমাযানের শেষ দশক আসত তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (মুসলিম ১৪/৩, হাঃ ১১৭৪) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৯৪)
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর কতিপয় সাহাবীকে স্বপ্নের মাধ্যমে রমাযানের শেষের সাত রাত্রে লাইলাতুল ক্বদর দেখানো হয়। (এ শুনে) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমাকেও তোমাদের স্বপ্নের অনুরূপ দেখানো হয়েছে। (তোমাদের দেখা ও আমার দেখা) শেষ সাত দিনের ক্ষেত্রে মিলে গেছে। অতএব যে ব্যক্তি এর সন্ধান প্রত্যাশী, সে যেন শেষ সাত রাতে সন্ধান করে। (১১৫৮, মুসলিম ১৩/৪০, হাঃ ১১৬৫, আহমাদ ৪৫৪৭) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৮৫)
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তা শেষ দশকে, তা অতিবাহিত নবম রাতে অথবা অবশিষ্ট সপ্তম রাতে অর্থাৎ লাইলাতুল কদর [ক্বদর]। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে অন্য সূত্রে বর্ণিত যে, তোমরা ২৪তম রাতে তালাশ কর। (২০২১) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৯২)
‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করতেন এবং বলতেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। (২০১৭) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৯০)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমাযানে ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় সওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। সুলায়মান ইবনু কাসীর (রহ.) যুহরী (রহ.) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (৩৫) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৮৮৪)
পরিশেষে বলা যায়, আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমের সূরা ক্বদরে ঘোষণা করেছেন- লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাসের (ইবাদাতের) চেয়েও উত্তম। সহীহ শুদ্ধ হাদীস থেকে জানা যায় যে, লাইলাতুল ক্বদর রমাযানের শেষ দশ দিনের যে কোন বিজোড় রাত্রিতে হয়ে থাকে। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখে লাইলাতুল ক্বদর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখিত আছে। হাদীসে এ কথাও উল্লেখিত আছে, যে কোন একটি নির্দিষ্ট বিজোড় রাত্রিতেই তা হয় না। (অর্থাৎ কোন বছর ২৫ তারিখে হল, আবার কোন বছর ২১ তারিখে হল এভাবে। আমাদের দেশে সরকারী আর বেসরকারীভাবে জাঁকজমকের সঙ্গে ২৭ তারিখের রাত্রিকে লাইলাতুল ক্বদরের রাত হিসেবে পালন করা হয়। এভাবে মাত্র একটি রাত্রিকে লাইলাতুল ক্বদর সাব্যস্ত করার কোনই হাদীস নাই। লাইলাতুল ক্বদরের সওয়াব পেতে চাইলে ৫টি বিজোড় রাত্রেই তালাশ করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে লাইলাতুল ক্বদরের সওয়াব পেতে সঠিক রাত্রিতে ইবাদাত করার সুযোগ দান করুন এবং আমাদের রমযান ও রমযান মাসের সকল ইবাদাত কবুল করুন। আমীন।